রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাড়ছে সহিংসতা

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পসমূহের বাসিন্দারা উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা এবং অজানা আতঙ্কে সময় পার করছেন। গত সাড়ে পাঁচ বছরে খুন হয়েছেন ১৩৮ জন। এর মধ্যে গত পাঁচ মাসে খুন হয়েছেন ৩৯ জন। অপহরণের শিকার হয়েছেন ২৪ জন। তাদেরকে মোটা অংকের মুক্তিপণের বিনিময়ে ছাড়িয়ে আনতে হয়েছে।

এছাড়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে গোলাগুলি, আধিপত্য বিস্তার, মাদক পাচারসহ সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। সব মিলিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বেড়েই চলেছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।

রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশ শুধু নিরাপত্তা ঝুঁকিতেই পড়েনি, অর্থনৈতিক ঝুঁকিও বাড়ছে। এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে (মিয়ানমার) নিরাপদ প্রত্যাবাসনকে এর সমাধান বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত ১০ ডিসেম্বর কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি হয়। এ ঘটনায় দুই রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এর কিছুদিন পর ২৬ ডিসেম্বর উখিয়ায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাত ও গুলিতে ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা (হেড মাঝি) মোহাম্মদ হোসেন নিহত হন। এরপর চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলিতে মোহাম্মদ নুরুন্নবী নামে এক রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হন। পরে তার ঘরে তল্লাশি চালিয়ে গ্রেনেড উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সবশেষ গত রোববার ভোরে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নুরুল বশর নামে এক যুবক নিহত হন।

আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ ও ২০২২ সালে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক হাজার ১৬৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন এক হাজার ৬৮৫ রোহিঙ্গা। এগুলোর মধ্যে ৪১টি হত্যা মামলা, ৪০টি অপহরণ মামলা রয়েছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলায় ১১টি ও ৯৭টি অস্ত্র মামলা হয়। তবে সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে মাদক সংক্রান্ত ৯৭৮টি।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, রোহিঙ্গারা ২০১৭ সালে আসার পর থেকে যেসব অপরাধে জড়িত ছিলেন, এখনো সেই ধরনের অপরাধ করছেন। রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের গ্রুপ রয়েছে। তারা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারামারি, সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। এমনকি খুন, মাদক, চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত হচ্ছেন অনেক রোহিঙ্গা। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে তারা নিজেদের জন্যই ঝুঁকি তৈরি করছেন। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখছে।

বার্তাবাজার/এ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর