নারী সদস্যকে জুতাপেটাসহ শ্লীলতাহানি করল ইউপি চেয়ারম্যান

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে এক নারী সদস্যকে চুলের মুঠি ধরে জুতাপেটাসহ শ্লীলতাহানি করলেন ইউপি চেয়ারম্যান। এ ঘটনায় (২ফেব্রুয়ারি) বৃহস্পতিবার রাতে ওই নারী ইউপি সদস্য বাদী হয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

স্থানীয় ও লাঞ্চিত ওই নারী সদস্য সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৯ নং উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশেষ এক সভা আহবান করেন চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হাসান খান সেলিম। সভায় পরিষদের ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের নারী সদস্য রোকসানা খাতুনের সাথে আরেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম রাকিবুলকে মোবাইলে বিভিন্ন ভাষায় গালমন্দ করা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এই সময় এর বিচার চান ওই মেম্বার। পরে সকল সদস্যদের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যান সেলিম খান নারী সদস্য রোকসানাকে ভৎর্সনার পাশাপাশি ক্ষমা চাইতে বলেন। এ সময় রোকসানা বলেন আপনি আমাকে একতরফা দোষারোপ করতে পারেন না। এ কথা বলার সাথে সাথে চেয়ারম্যান উত্তেজিত হয়ে উঠেন। পরে সকল সদস্যদের সামনেই ওই নারীর চুলের মুঠি ধরে পায়ের জুতা দিয়ে পিটিয়ে আহত করে এবং তার কাপড় টানা হেচড়া করত শ্লীলতাহানি করে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেন ওই নারী।

এসময় ওই নারী সদস্যের লোকজন ও চেয়ারম্যানে লোকজন মধ্যে এক উত্তপ্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এ সময় স্থানীয়রা তাদেরকে থামিয়ে দেয়। এই ঘটনার পর ওই নারী সদস্য চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার জন্য থানায় এসে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এ ঘটনার সময় উপস্থিত থাকা ইউপি সদস্য আবুল বাসার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, একজন চেয়ারম্যান একজন নারী সদস্য কে এইভাবে মারধর করা খুবই লজ্জাজনক। ঘটনার পর লজ্জায় সভা শেষ না করেই আমরা বের হয়ে আসি।

নারী সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম রাকিবুল বলেন, আমি তো চেয়ারম্যান সাহেবকে এভাবে মারতে বলিনি। আমি শুধু বিচার চাইছিলাম। কিন্তু এখন তো লজ্জা লাগছে।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য রোকসানা বলেন, চেয়ারম্যান আমার চুলের মুঠি ধরে জুতা দিয়ে পেটায়। এ ঘটনার পর তার লোকজন আমার দিকে তেড়ে আসে। পরে আমি অনেকের সহযোগিতায় প্রাণে রক্ষা পাই। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হাসান খান সেলিম বলেন, আমি কোনো মারধর করিনি। এক মেম্বারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশেষ সভা ডেকে তাকে শাসন করেছি মাত্র। এ সময় উত্তেজিত হয়ে সে আমাকে মারতে আসে। তাছাড়া ওই মেয়েটি নেশাখোর। অনেক মেম্বারের সাথে সে খারাপ ব্যবহার করে আসছে।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ পীরজাদা শেখ মোহাম্মদ মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাফিজা জেসমিন বলেন ঘটনাটি আমি শুনেছি এবং থানার অফিসার ইনচার্জকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্হা নিতে বলেছি।

বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর