দেবীদ্বারের পোনরা পৌষ সংক্রান্তি মেলায় লটারির নামে জুয়া, প্রশাসন নীরব

কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার পোনরা মেলা ১৯ জানুয়ারী সার্কাস, নাগরদোলা, রেলগাড়ীসহ দেশীয় খেলা ধুলা দিয়ে শুরু হয়। এ মেলার নামে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অনুমোদন বিহীন ভাবে চলছে রাজলক্ষ্মী র‌্যাফেল ড্র। এ র‌্যাফেল ড্র টিকেট কেটে সর্বস্বান্ত হচ্ছে এলাকার মানুষ।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, স্থানীয় জুয়া খেলার সংঘবদ্ধ দল মেলায় স্থানীয় ভাবে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই অবৈধ লটারি বানিজ্য করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ লটারিতে মোটর সাইকেল, ফ্রীজ, গাভী, বাই সাইকেল, মোবাইল ফোন, স্বর্ণের দুল, খাট পালঙ্ক, এমনকি টিফিন বক্স ইত্যাদিসহ বেশ কিছু আকর্ষণীয় পুরুস্কার ঘোষনা করছে। এ পুরস্কারের আশায় লটারি কেটে সর্বস্বান্ত হচ্ছে এলাকার সাধারণ ও নিন্ম আয়ের মানুষ। প্রতিদিন রাত আটটায় এ লটারীর ড্র মেলা প্রাঙ্গণে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ ড্র মানুষকে বিশ্বাস করার জন্য স্থানীয় কয়েকটি ফেসবুক পেইজে সরাসরি লাইভ প্রচার করা হয়।

এদিকে প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয় ২০ টাকা মূল্যের এ লটারির টিকেট বিক্রি। এ এলাকা সহ আশপাশের উপজেলার পাড়ায় মহলায় গাড়ী দিয়ে লোভনীয় মাইকিং এর মাধ্যমে প্রশাসনের ডগায় আঙ্গুল দিয়ে বিক্রি করছে সারাদিন ভর এ সর্বনাশা লটারির টিকেট।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, এ লটারীকে কেন্দ্র করে আশপাশের এলাকায় ব্যবসা বানিজ্য অচল প্রায়। সবাই লটারি পাওয়ার আশায় টিকেট কেনায় ব্যস্ত, রাত হলে যাচ্ছে মেলার মাঠে। তাই বর্তমানে আমাদের ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ চলছে।

এবিষয়ে মেলা ফেরত আবুল হোসেন, আলাল, লিটন ইসলাম জানান, প্রতিদিন এ লটারি কিনছি এখনো পইনি যতদিন চলবে কিনতে থাকবো যদি পাই। যদি পাওয়ার আশায় এলাকার সবাই সহজ সরল মানুষ মহিলা, শিশু, কিশোর, এমনকি বৃদ্ধরাও খেয়ে-না খেয়ে লটারীর টিকেট কিনে সর্বস্বান্ত হচ্ছে।

জানাযায়, গত বৃহস্পতিবার মুরাদনগর উপজেলা ত্রিশ গ্রামে টিকেট বিক্রি করতে গিয়ে লটারীর ৪টি ড্রাম, ভ্যান ও লটারী বিক্রেতাকে আটক করে রাখে ওই এলাকার স্থানীয় কিছু জণতা। ঐদিন লটারী ড্রর সময় ৪টি ড্রাম না থাকা ঘটনাটি জানায়ানি হয়। পরে ওই ড্রামগুলো ছাড়াই লটারীর ড্র অনুষ্ঠিত হয়।

তবে এ কদিনের লটারির ড্র খেলায় শোনা যায়, অচল মোটর সাইকেল ও নতুন পুরাতন জিনিসপত্র পুরস্কার দেয়া হয়েছে। এ অনুমোদনহীন লটারি কতদিন চলবে কেউ জানেনা। স্থানীয়দের দাবী মেলা চললেও অবিলম্বে এ অবৈধ সর্বনাশা লটারি বন্ধ করা হোক।

মেলার ইজারাদার আবু কাউছার মোবাইল ফোনে বলেন, আমি লটারীর বিষয়ে আপনার কাছে কিছু বলতে রাজী নই।

জানতে চাইলে গত শনিবার দুপুরে দেবীদ্বার থানার ওসি কমল কৃষ্ণ ধর জানিয়েছিলেন মেলায় লটারীর বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

মঙ্গলবার বিকেলে এ বিষয়ে দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজী চক্রবর্তীর সরকারী মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোন বক্তব্য নেয়া যায়নি।

বার্তাবাজার/জে আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর