শিক্ষা ব্যবস্থায় রূপান্তর ঘটতে যাচ্ছে : শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় রূপান্তর ঘটতে যাচ্ছে। শিখন ও পঠন পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এ বছর আমরা ২৬টি নতুন বই রচনা করেছি। এগুলোতে ভুল থাকলে আমরা পরিবর্তন করব।

তিনি বলেন, একটি পক্ষ গুজব ছড়িয়ে পরিবেশ অশান্ত করতে চায়। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সঠিক তথ্য জানতে হবে, জানাতে হবে। যেসব তথ্য পাঠ্যবইয়ে নেই সেসব তথ্যকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে পাঠ্যবইয়ে রয়েছে বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যা মোটেই সত্য নয়।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) রাজশাহীর শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান অডিটোরিয়ামে ‘শিক্ষা ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন’ বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মানোন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। তারা ইতোমধ্যে অ্যাকাডেমিক এবং ফিজিক্যাল মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করেছে। কর্মমুখী ১৩টি পিজিডি কোর্স চালুর উদ্যোগ নিয়েছে ও ১৯টি শর্ট কোর্স চালু করতে যাচ্ছে। এসব খুবই ভালো উদ্যোগ। কর্মমুখী শিক্ষা নিশ্চিতে এসব উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। কারণ বর্তমান সময়ে একজন শিক্ষার্থীকে অবশ্যই ভাষা, সফট স্কিল, আইসিটি ও অন্ট্রাপ্রেনারশিপ শিখতে হবে। সেটা না হলে বিশ্বের নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়বে।

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, শিক্ষার মানোন্নয়ন আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এজন্য আমরা নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সময়ের চাহিদার নিরিখে নতুন নতুন পিজিডি কোর্স ও কর্মমুখী শর্ট কোর্স চালু করতে যাচ্ছি। কিন্তু নতুন কোর্সগুলো পড়ানোর জন্য আমাদের দক্ষ শিক্ষকের অভাব আছে।

তিনি বলেন, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে উপযুক্ত করে গড়ে তোলাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ একজন শিক্ষক তো একদিনে তৈরি হয় না। এর পেছনে অনেক শ্রম, মেধা ও সময় ব্যয় করতে হয়। আমরা নতুন কর্মমুখী কোর্স আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে চালু করব। এর মধ্যেই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এজন্য মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে শিক্ষকদেরকেই।

সব ধরনের সীমাবদ্ধতা জয়ের প্রত্যয় জানিয়ে ড. মশিউর রহমান বলেন, আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। এই সীমাবদ্ধতাকে পাশ কাটিয়ে এগোতে হবে। বাস্তবিক পক্ষে বৈষম্যহীন সমাজ পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশ এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারেনি। আমরা এটিকে হয়তো কমিয়ে আনতে পারি। কিন্তু সেটি নির্মূল করা অনেক কঠিন। কেননা মনুষ্যসৃষ্ট এই সমাজে বহুদিন ধরে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার যে প্রবর্তন হয়েছে এবং শ্রেণি তৈরি হয়েছে, সেটি একেবারেই স্ট্রাকচার্ড। সেটি ভাঙার একমাত্র পথ শিক্ষায় আলোকিত হওয়া।

উপাচার্য বলেন, একজন মার্জিত, রুচিশীল, শিক্ষিত ও দক্ষ মানুষ হয়ে গড়ে উঠে যুক্তরাষ্ট্রে বারাক ওবামা কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। তেমনি শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমার এই শ্রেণি-কাঠামো ভেঙে দিতে পারি।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম কবীর ও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শাহ আজম প্রমুখ।

বার্তাবাজার/জে আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর