ওয়াহেদপুর মাদ্রাসায় নিয়োগ পেলেন অধ্যক্ষের ছেলে ও সভাপতির মেয়ে

কুমিল্লা দেবীদ্বার উপজেলার একটি মাদ্রাসায় বিধি লঙ্ঘন করে নিজেদের ছেলে-মেয়েকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সভাপতি ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি উপজেলার সুবিল ইউনিয়নের ওয়াহেদপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার সভাপতি কাজী শাহ আলম ও অধ্যক্ষ মো. সফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে।

এ ঘটনায় পুনঃ পরীক্ষার দাবি জানিয়েছেন নিয়োগ পরীক্ষার একাধিক প্রার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সভাপতি ও অধ্যক্ষ।

অসুদুপায়ে নিয়োগের বিষয়টি উল্লেখ করে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন এক পরীক্ষার্থীর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. বশিরুল আলম। এ ছাড়াও মো. আবদুল জলিল নামে অপর এক পরীক্ষার্থী এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগে তারা সুষ্ঠু তদন্তের পাশাপাশি নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত ও পুনরায় পরীক্ষার নেওয়ার দাবি জানান।

লিখিত অভিযোগে তারা বলেন, সভাপতি ও অধ্যক্ষের ছেলে-মেয়ের নিয়োগের বিষয়টি আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও পরীক্ষা কার্যক্রম ছিল লোক দেখানো ঘটনা। এ ছাড়াও গত ২৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ ছিল বলে জানিয়েছেন তারা।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ৫টি পদের জন্য দেওয়া নিয়োগ পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়সসীমা, বেতন স্কেল, অভিজ্ঞতা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ছবি, অগ্রাধিকার ও কোটা সংরক্ষণের শর্তগুলো উল্লেখ নেই। এ ছাড়াও নিয়োগ পরীক্ষার পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্রে কর্তৃপক্ষ, প্রতিষ্ঠানের সিল, স্বাক্ষর ও স্মারক নম্বর নেই।

অভিভাবক মো. বশিরুল আলম বলেন, ‘সভাপতি ও অধ্যক্ষ সর্ম্পূণ অবৈধ উপায়ে তাদের নিজের ছেলে-মেয়েকে নিয়োগ দিয়েছেন। তারা ও তাদের আস্থাভাজন কয়েকজন শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড পরিচালনা ও ডিজি প্রতিনিধির সঙ্গে উপস্থিত থেকে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রস্তুত, প্রিন্ট ও বিলি করেন, যা অনিয়মের পর্যায়ে পড়ে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রশ্নপত্র আগে থেকেই ঠিক করা ছিল, যা পরীক্ষার কয়েকদিন আগে ফাঁস করা হয়। এ ছাড়াও লিখিত পরীক্ষার পূর্বে সভাপতি ও অধ্যক্ষের ছেলেমেয়েকে ডিজির প্রতিনিধির সঙ্গে একান্তে সাক্ষাৎ করার সুযোগ দেয় নিয়োগ বোর্ড।’ নিয়োগ কার্যক্রমে মোটা অংকের বাণিজ্য হয়েছে দাবি করে তিনি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল ও পুনঃপরীক্ষার দাবি জানান।

পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকের এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সভাপতির মেয়ে ও আমার ছেলে নিয়োগ প্রার্থী হওয়ায় আমরা কেউ নিয়োগ বোর্ডে সদস্য ছিলাম না। পরীক্ষায় যারা সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছে তারাই নিয়োগ পেয়েছে।’

সভাপতি মো. কাজী শাহ আলম বলেন, ‘মাদ্রাসার ক্ষতির জন্য স্থানীয় কিছু লোক অযোগ্যদের নিয়োগ দিতে সুপারিশ করেন। নিয়োগ বোর্ড যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দিয়েছে।’

এ বিষয়ে ডিজির প্রতিনিধি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি। যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’

বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর