পুলিশের জোরপূর্বক আটক থেকে বাঁচতে আখাউড়ায় এক নারীর বিষপান

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় জোর করে থানায় নিয়ে আসতে চাইলে পুলিশের সামনে এক নারী বিষপান করে। পরিবার ও প্রতিবেশিরা ওই নারীকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালে স্টমাক ওয়াশ (পাকস্থলি পরিস্কার) করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ডাক্তাররা তাকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায়। ওই নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় প্রেরণ করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই নারীকে তার স্বজনরা ঢাকা যাচ্ছেন। তাদের সাথে একজন পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শকও রয়েছেন। ওই নারী হলো উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের আইয়ুব খানের মেয়ে মৌসুমী আক্তার (২৫)। সোমবার সন্ধ্যায় নুরপুর গ্রামে মৌসুমি আক্তারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

মৌসুমি আক্তারের মা শাহানা বেগম হাসপাতাল চত্বরে অভিযোগ করে বলেন, সন্ধ্যা ৬টার দিকে আখাউড়া থানার এএসআই আব্দুল আজিজ মহিলা পুলিশসহ ৮/১০ জন পুলিশ আমার বাড়িতে এসে আমার মেয়েকে ধরে থানায় নিয়ে যেতে চায়। আমার মেয়ে তখন তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করে বলে আমাকে থানায় নিবেন কেন, আমি কী বেলেক করি। আমার দুইটা ছেলে আছে, আমার স্বামী পাগল। আমি থানায় যাবো কেন?। আজিজ দারোগা বলে ওসি সাহেব তোমাকে থানায় নিয়ে যেতে বলেছে। এসময় আমি পুলিশকে বলি, আমার মেয়ের হার্টে ব্লক আছে, তাকে নিয়েন না। দরকার হলে আমি থানায় যাবো। এসময় পুলিশ জোরাজোরি করে ধরে নিতে চাইলে আমার মেয়ে পুলিশের সামনে বিষ খেয়ে ফেলে। কিন্তু পুলিশের সামনে বিষপান করলেও কেউ তাকে ফিরাতে আসেনি। পরে আমাকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। তিনি আরও অভিযোগ করেন, এরআগেও পুলিশ কয়েক বার আমাকে ধরে আনতে চেয়েছিল।

এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আখাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসক ওই নারীকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। এসময় আখাউড়া থানার ওসি মোঃ আসাদুল ইসলামসহ বেশ কয়েক পুলিশ সদস্য উপস্থিত রয়েছে। ওনি নিজে তার চিকিৎসার খোঁজ খবর নিচ্ছে। পরে রাত ৮টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে এম্বুলেন্সে করে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার সময় থানার এস. আই আবু ছালেক সঙ্গে যান।

এ ব্যাপারে আখাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ লুৎফুর রহমান বলেন, রোগীর প্রেসার অনেক কমে গিয়েছিল। স্টমাক ওয়াশ করে বিষ পাওয়া গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আখাউড়া থানার ওসি মোঃ আসাদুল ইসলাম বলেন, কিছু মাদক উদ্ধার হয়েছিল। আমাদের কাছে তথ্য ছিল মাদকগুলো তাদের। এ প্রেক্ষিতে আমি পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। তবে তার বিরুদ্ধে কোন ওয়ারেন্ট ছিল না। তার ঘর কিছু পাওয়া যায়নি। আগে রোগীর চিকিৎসা হোক। তারপরে যদি তদন্তে এএসআই আজিজের কোন অপরাধ থাকে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে এএসআই আজিজুর রহমানের মোবাইলে একাদিকবার ফোন করা হলেও ফোনকল রিসিভ করে নাই উনি।

বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর