স্কুল ফাঁকি দিয়ে তদবির ও বদলী বানিজ্যে ব্যস্ত তিন শিক্ষক

নিজ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে বিভিন্ন চাকুরীর তদবির ও বদলী বানিজ্যে সর্বদা ব্যস্ত থাকেন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আমিনুর ইসলাম,খোকশাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম ও চর কালিদাসগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠেছে।

এ শিক্ষক নেতারা সহজ সরল মানুষদের নিকট থেকে বিভিন্ন চাকুরীর প্রলোভন আর সুবিধাজনক স্কুলে বদলীর লোভ দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। শুধু তাই নয় এ দালাল চক্রটি নিজের খেয়াল খুশি মতো বিদ্যালয়ে আগমন ও প্রস্থান করে থাকেন।

এ চক্রের ভুক্তভোগী ও স্থানীয় অভিভাবকদের অভিযোগ থেকে জানা যায়,শিক্ষক আমিনুর ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে নিজ কর্মস্থলে না গিয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন চাকুরীর তদবির ও শিক্ষকদের বদলী বানিজ্যে ব্যস্ত থাকেন।

চাকুরীতে যোগদানের পর থেকেই শিক্ষক আমিনুর নিয়মিত স্কুল যায় না। বছরের জানুয়ারী থেকে মার্চ পর্যন্ত শিক্ষক বদলীর সময়। এ কারণে ফাকিবাজ এ শিক্ষক শিক্ষা অফিসের সাথে যোগসাজস করে অবৈধভাবে প্রতি বছর জানুয়ারীর আগেই মৌখিক ডেপুটেশনে চরাঞ্চলের স্কুলে যান নির্বিঘ্নে বদলী বানিজ্য করার লক্ষ্যে।

তার ধারনা চরাঞ্চলের স্কুলে মাসে ২/৪ দিন গেলেই চলে। তারপর বদলীর সময় শেষ হলে পুনরায় স্বকর্মস্থলে ফিরে আসেন।

সরজমিনে তার কর্মস্থল শিয়ালকোল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ছুটির দরখাস্ত ছাড়াই তাকে অনুপস্থিত পাওয়া যায়। এ সময় শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে নাম প্রকাশ না শর্তে এমন অভিযোগের কথা স্বীকার করেন।

শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ও শিক্ষকদের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ভয়ভীতি ও হুমকি-ধামকি দিয়ে জিম্মি করে এসব অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করে অনেকেই বলেন-তিনি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান না করেই প্রতিমাসে বেতন উত্তোলন করছেন। ফলে সরকারের টাকা জলে যাচ্ছে।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায় যে,সম্প্রতি কামারখন্দ উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রায় এক মাস স্কুলে অনুপস্থিত থেকে নৌকার বিরুদ্ধে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন শিক্ষক নেতা আমিনুর ইসলাম। শুধু তাই নয়, রবিবার ও সোমবার (২৮ ও ২৯ জুলাই) কোন প্রকার ছুটি ছাড়াই স্কুল চলাকালিন সময়ে কামারখন্দ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে জয়ী বিদ্রোহী প্রার্থীর শপথ বাক্য পাঠ এবং দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্টানে অংশ গ্রহণ করে ব্যাপক আনন্দ উল্লাস করছেন এ শিক্ষক নেতা।

শিয়ালকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষক হাজিরা খাতায় গত ৭ দিনে কোন স্বাক্ষর নেই এবং ছুটির দরখাস্ত দেয়া হয়নি। একই অবস্থা ফাকিবাজ দালাল শিক্ষক নেতা নজরুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর হোসেনের।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ফাকিবাজ শিক্ষক নেতা আমিনুর ইসলাম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দৌলতন নেছা এ বিষয়ে কথা বলতে নারাজ।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আপেল মাহমুদ বলেন,বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এমন ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর