সিরাজগঞ্জে উদ্বেগজনক হারে এইডস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে

দিনের পর দিন সিরাজগঞ্জ জেলাতে এইডস রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। পুরোপুরি নিশ্চিত ভাবাই বলা যায় এইডসের ঝুঁকিতে এখন পুরো সিরাজগঞ্জ জেলাতে। চলতি বছর (২০২২ সাল) ৭৬ জন এইচআইভি পজিটিভ রোগী পাওয়া গেছে। যা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

আক্রান্ত ৭৬ জনের মধ্যে গত ৬ মাসে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে এইচআইভি পরীক্ষা করে ৬৩ জন পজিটিভ রোগী পাওয়া গেছে। চলতি মাসে আজ পর্যন্ত ৪ জন পজিটিভ পাওয়া গেছে। উদ্বেগজনক হারে এ জেলায় বাড়ছে এইচআইভি পজিটিভ রোগী

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) জেলার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের এইচ টি সি/এ আরটি সেন্টারের কাউন্সিলর এ্যান্ড এ্যাডমিনিস্টিটর মাসুদ রানা জানান, গত ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ২০ তারিখ থেকে সিরাজগঞ্জে এইচআইভি পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ৭৬ জন পজিটিভ রোগী পাওয়া গেছে। বিগত বছরের তুলনায় এবছর পজিটিভ রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। পজিটিভ রোগীর বেশির ভাগই ইনজেকটিভ ড্রাগ এডিক্টেড।এখানে পরীক্ষার সংখ্যা খুবই কম তার মধ্যে যাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে তাদের ৫০ ভাগই পজিটিভ হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ জেলায় বর্তমানে বেলকুচি উপজেলায় দুজন এবং সদর উপজেলাতো ৬৫ জন এইডস রোগীর সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে ড্রাগ এডিক্টেড, যৌনকর্মী, তৃতীয় লিঙ্গ এবং সাধারণ মানুষ রয়েছে। যারা আক্রান্ত তাদের মোটিভেশনের মাধ্যমে চিকিৎসা নিতে আগ্রহী করা হচ্ছে। কারণ, এই রোগের কোনো ভ্যাকসিন এখনো আবিষ্কৃত হয়নি।

জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের সচেতন মানুষজন বলছে সকল ধরনের মানুষকে এই পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে। এজন্য স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট সকলকে উদ্বৃদ্ধ করতে হবে যাতে সকলেই এই পরীক্ষার আওতায় আসে।

সিরাজগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক আবু আব্দুল্লাহ জাহিদ জানান, জেলায় মূলত ইনজেকটিভ ড্রাগ এডিক্টেডের মাধ্যমে এইচআইভি বেশি ছড়াচ্ছে। সবার ধারণা প্যাথিড্রিনের মাধ্যমে এই ড্রাগ গ্রহণ করছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে শহরের ধানবান্ধি মহল্লায় এই ইনজেকশন বিক্রি করা হচ্ছে।

জেলায় একমাত্র এইচআইভি প্রতিরোধ নিয়ে সচেতনতা মূলক কাজ করা এনজিও লাইট হাউজ এনজিও জানিয়েছে, মূলত আমরা ৩য় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর মধ্যে সচেতনতার কাজ করছি। এছাড়া পুরুষ যৌন কর্মীদের মধ্যেও সচেতনতার কাজ করছি। তবে অনেক বিশাল আয়োজনের মাধ্যমে দ্রুত সচেতনা বাড়িয়ে তোলা উচিত।

সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন রামপদ রায় বলেন, জেলায় দ্রুত বাড়ছে এইচআইভি পজিটিভ রোগী সংখ্যা। আমরা সরকারিভাবে সবাইকে সচেতনা বৃদ্ধি জন্য বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা করছি। সবাইকে এইচআইভি রোগ প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা এবং সকলকে টেষ্টের আওতায় আনার জন্য চেষ্টা করছি।

সিরাজগঞ্জ জেলার মানুষের দ্রুত সময়ে সচেতন হওয়া জরুরি। গর্ভবতী মা, রক্ত প্রদানকারী, ইনজেকটিভ এ্যাডাকটেড, সেক্সুয়াল ওয়ার্কারসহ সাধারণ মানুষকে এই পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে। পজিটিভের সংখ্যা যেহেতু বাড়ছে এবং অনেক রয়েছে তাই যদি এখন বেশি বেশি প্রচার এবং সচেতনা বৃদ্ধি না করা হয় তাহলে জেলাটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে।

নাজমুল/বার্তাবাজার/জে আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর