রংপুরে জাপার জাতীয় সংবিধান সংরক্ষণ দিবস পালিত

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগের দিনের স্মরণে জাতীয় সংবিধান সংরক্ষণ দিবস পালন করেছে রংপুর মহানগর ও জেলা জাতীয় পার্টি।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় মহানগর জাতীয় পার্টির অস্থায়ী কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি ও সিটি কর্পোরেশনের সদ্য বিদায়ী মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এই আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন ।

মহানগর জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি জাহেদুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা চাঁপার আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মাসুদ চৌধুরী নান্টু সদস্য সচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাক,
ছাত্রসমাজের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মারুফ হোসেন তালুকদার প্রিন্স, মহানগর সভাপতি ইয়াসির আরাফাত আসিফ, যুব সংহতির মহানগর সভাপতি শাহিন হোসেন জাকির, মহানগর মহিলা পার্টির যুগ্ন আহবায়ক জ্যোৎস্না বেগম প্রমুখ।

কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইয়াসির বলেন, ১৯৯০ সালে যখন এরশাদ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছিল তখন একটি মানুষও যাতে মারা না চায় বা জান ও মালের ক্ষতি না হয় সেজন্য তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছিলেন। উপরাষ্ট্রপতির হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে একটি অভাব সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করার আহ্বান জানান এবং বলেন যেই ক্ষমতায় আসুক আমরা গ্রহণ করব কিন্তু সেই সময়ের ২২ দলীয় ঐক্যজোট তাদের কথা রাখেনি তারা এরশাদ সাহেবকে গ্রেফতার করে জেলে ঢুকিয়েছেন। নির্বাচন করে করতে বাধা দেয়া হয়েছিল কিন্তু রংপুরের মানুষ আন্দোলন করে তার নমিনেশন বৈধ করেছিল এরপর থেকে জাতীয় পার্টি এই দিনটাকে জাতীয় সংবিধান সংরক্ষণ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

প্রধান সভাপতির বক্তব্যে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘যে মানুষটা সাড়ে আট বছর ক্ষমতায় ছিলেন তিনি ইচ্ছা করলে, বর্তমান সরকারের মতো চরিত্র হলে অনেক মানুষ মেরে হলেও ক্ষমতায় থাকতে পারতো কিন্তু তার হাতে রক্তের কোন দাগ নেই’।

তিনি আরো বলেন, নব্বই সালে ঢাকা কেন্দ্রিক এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জোট এরশাদকে প্রস্তাব দিয়েছিল যে নতুন করে নির্বাচন দিতে যাতে জনগণ ভোট দিতে পারে। যদি মানুষ তাকে আবার ভোট দেয় তাহলে তারা সেই সিদ্ধান্তকে মেনে নেবেন। তাদের কথায় বিশ্বাস করে হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ উপরাষ্ট্রপতির পদ তৈরি করে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। এবং তিনি শর্ত দেন যে নির্বাচনে যাতে লেভেল প্লেইং ফিল্ড থাকে এবং উনি যাতে অন্যান্য প্রার্থীদের মত অংশগ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু ক্ষমতা হস্তান্তরের তিন দিনের মাথায় তাকে এবং রওশন এরশাদকে গ্রেপ্তার করা হলো। এবং পরপর সাবেক মন্ত্রীদেরকেও গ্রেফতার করা হয়। সবাইকে জেলে ঢুকিয়ে তাকে নির্বাচন করতে না দেয়ার ষড়যন্ত্র শুরু হলো। তারপর অতি গোপনে জেলগেট থেকে মনোনয়নপত্রে তার সই নিয়ে জমা দেয়া হলে তার মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হলো। এরপর রংপুরের সাধারণ মানুষ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুললে একপর্যায়ে রংপুরের জেলা প্রশাসক রিক্সায় উঠে তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন। সেইদিন জাতীয় পার্টির পুনর্জন্ম হয়। এরশাদের গণতন্ত্র ও সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে পদত্যাগ করার এই দিনকে আজীবন জাতীয় পার্টি স্মরণ করবে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সংবিধান অনুযায়ী পদত্যাগ করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর ৬ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয়ভাবে এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সংবিধান সংরক্ষণ দিবস পালন করে আসছে জাপা।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর