‘আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে’

বিজয় ও স্বাধীনতার মাসে প্রতিটি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের বিশেষ ক্লাসের আয়োজন করে আগামী প্রজন্মের শিক্ষার্থীদেরকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও নিজ এলাকার ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানান দিতে হবে। রোববার (৪ ডিসেম্বর) দেবীদ্বার হানাদারমুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় আলোচকরা ওই বক্তব্য তুলে ধরেন।

দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন উপলক্ষে রোববার সকাল ১০ টায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একটি বর্নাঢ্য র‌্যালী উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এসময় স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদদের স্মরনে উপজেলা প্রশাসন, থানা প্রশাসন, উপজেলা প্রেসক্লাব, মহিলা লীগ, কৃষক লীগের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর মুর‌্যাল, স্বাধীনতা স্তম্ভ ও গণকবরে পুষ্পমাল্য অর্পণে শ্রদ্ধা জানানো হয়। সকাল ১১টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাকক্ষে ‘মুক্তিযুদ্ধে দেবীদ্বার’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজি চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনায় অংশ নেন, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাসেম ওমানী, দেবীদ্বার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কমল কৃষ্ণ ধর, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিকুল ইসলাম, বরকামতা ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক এবিএম আতিকুর রহমান বাশার, উপজেলা আ’লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক মো. ছিদ্দিকুর রহমান ভ‚ঁইয়া, কুমিল্লা (ঊঃ) জেলা মহিলা আ’লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য নারী নেত্রী শিরিন সুলতানা, উপজেলা সেচ্ছা সেবক লীগের সভাপতি মো. মান্নান মোল্লা, জাফরগঞ্জ মীর আব্দুল গফুর কলেজ’র প্রভাষক সাইফুর ইসলাম শামিম, উপজেলা মহিলা আ’লীগ সভাপতি নাজমা মোরশেদ প্রমূখ।

আলোচকরা আরো বলেন, ১৯৭১ সালের ৪ডিসেম্বর দেবীদ্বার পাক হানাদার মুক্ত হয়েছিল। ৭১’র রক্তে ঝরা দিনগুলোতে মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণে হানাদার মুক্ত হয়েছিল কুমিল্লার বিভিন্ন অঞ্চল। তারই ধারাবাহিকতায় দেবীদ্বার এলাকা হানাদার মুক্ত হয়েছিল ৪ ডিসেম্বর। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথভাবে ওইদিন হানাদারদের বিরুদ্ধে আক্রমন পরিচালনা করে। ৩ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিবাহিনী ‘কুমিল্লা-সিলেট’ মহাসড়কের কোম্পানীগঞ্জ সেতুটি মাইন বিষ্ফোরনে উড়িয়ে দেয়। মিত্রবাহিনীর ২৩ মাউন্টেড ডিভিশনের মেজর জেনারেল আর.ডি হিরা’র নেতৃত্বে বৃহত্তর কুমিল্লায় এই অভিযান পরিচালিত হয়। মিত্রবাহিনীর একটি ট্যাংক বহর বুড়িচং ব্রাক্ষণপাড়া হয়ে দেবীদ্বারে আসে। হানাদাররা ওই রাতেই দেবীদ্বার ছেড়ে কুমিল্লা ময়নামতি সেনানিবাসে পালিয়ে যায়। ধীরে ধীরে মুক্তিবাহিনীর বিভিন্ন গ্রুপ দেবীদ্বার সদরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এরই মধ্যে মিত্রবাহিনীর ট্যাংক বহরটি দেবীদ্বার থেকে চান্দিনা রোডে ঢাকা অভিমুখে যাওয়ার সময় মোহনপুর এলাকায় ভুল বোঝাবুঝির কারনে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে গুলি বিনীময় হলে মিত্রবাহিনীর ৬ সেনা সদস্য নিহত হয়। এই দিনে দেবীদ্বারের উল্লাসিত জনতা ও মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীন বাংলার পতাকা নিয়ে বিজয় উল্লাসে ‘জয়বাংলা’ শ্লোগানে মেতে উঠে। দুপুর পর্যন্ত ওইদিন হাজার হাজার জনতা বিজয় উল্লাসে উপজেলা সদর প্রকম্পিত করে তোলে।

বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর