প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম সফরে ৩০ প্রকল্প উদ্বোধনের অপেক্ষায়

আগামীকাল রোববার (৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় ভাষণ দিবেন নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে। এই উপলক্ষে শুধু পলোগ্রাউন্ড মাঠ নয়, নগরের টাইগারপাস, লালখানবাজার, কাজীর দেউড়ি, নিউ মার্কেট এলাকা তোরণে ছেয়ে গেছে। একই সঙ্গে চলছে সড়ক মেরামত, রাস্তার দু’পাশে সৌন্দর্যবর্ধন ও পরিচ্ছন্নতার কাজ।

এদিকে সবশেষ ২০১২ সালের ২৮ মার্চ পলোগ্রাউন্ড মাঠে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১০ বছর ৯ মাস পর একই মাঠে আবার ভাষণ দেবেন তিনি। আর এ জনসভায় উপস্থিত হয়ে চট্টগ্রামের ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন তিনি। একই সঙ্গে আরও চারটি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনও করবেন প্রধানমন্ত্রী।

রোববার (৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে পা রাখবেন তিনি। এরপরই নগরের পলোগ্রাউন্ডে আয়োজিত জনসভায় যোগ দিবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই মাঠে নৌকার আদলে প্রস্তুত করা হয়েছে মঞ্চ। যেখানে প্রায় ২০০ অতিথি একসঙ্গে বসতে পারবেন। তবে জনসভার মঞ্চে বসেই আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনের পাশাপাশি আরও চারটি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে তিনটি প্রকল্প। সেগুলো হলো- জেলার ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী উপজেলায় হালদা নদী ও ধুরং খালের তীর সংরক্ষণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প, সন্দ্বীপ উপজেলার ৭২ নং পোল্ডারের ভাঙন প্রবণ এলাকায় স্লোপ প্রতিরক্ষা কাজের মাধ্যমে পুনর্বাসন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প ও বাঁশখালী উপজেলার ৬৪/১এ, ৬৪/১বি এবং ৬৪/১সি পোল্ডারের সমন্বয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশের স্থায়ী পুনর্বাসন প্রকল্প (২য় সংশোধিত)।

কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে সীতাকুণ্ড টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ফটিকছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং রাউজান টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া কোতোয়ালী থানাধীন দারুল উলুম আলীয়া মাদ্রাসার একটি ছয় তলা ভবন এবং সীতাকুণ্ড টেকনিক্যাল স্কুলে একটি পাঁচ তলা ভবন ও একটি চার তলা প্রশাসনিক ভবন, ওয়ার্কশপ, একতলা সার্ভিস এরিয়া ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণসহ ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীনে কোতোয়ালী থানাধীন গুল-এ জার বেগম সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছয় তলা ভবন, কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছয় তলা ভবন, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে ১০ তলা একাডেমিক ভবন, কুসুমকুমারী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছয় তলা ভবন, পূর্ব বাকলিয়া সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছয় তলা ভবন, মিরসরাই উপজেলার করেরহাট কে.এম. উচ্চ বিদ্যালয়ের চার তলা ভবন, পাঁচলাইশ থানাধীন বন গবেষণাগার উচ্চ বিদ্যালয়ের ছয় তলা ভবন, বোয়ালমারী উপজেলাধীন হাজী মোহাম্মদ জানে আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের চার তলা ভবন, পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচ তলা ভবন, সন্দ্বীপের সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের চার তলা ভবন এবং ডবলমুরিং থানাধীন সরকারি সিটি কলেজে ১০ তলা একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করা হবে।

এ ছাড়া উদ্বোধন করা হবে পলোগ্রাউণ্ড বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ভবন সম্প্রসারণ, সরকারী মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের লালদিঘী মাঠের ছয় দফা মঞ্চ নির্মাণসহ সংস্কার কাজ এবং খুলশী থানাধীন সিএমপি উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ভবনের সম্প্রসারণ কাজ উদ্বোধন করা হবে।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অধীনে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে মীরসরাইয়ে হিংগুলি ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র এবং লোহাগড়ায় চুনতি ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিটাক চট্টগ্রাম কেন্দ্রের নারী হোস্টেল নির্মাণকাজও উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে নাসিরাবাদ শিক্ষানবিস প্রশিক্ষণ দপ্তর সংস্কার ও আধুনিকায়ন কাজ।

উদ্বোধনের তালিকায় থাকা অন্যান্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেওয়ানহাটে হর্টিকালচার সেন্টারে একটি প্রশিক্ষণ ও অফিস, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুইটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন (প্রতিটি ৫০০০ বিএইচপি/ ৭০ টন বোলার্ড পুল) টাগবোট সংগ্রহ-শীর্ষক প্রকল্প ও চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ড এবং টার্মিনালের জন্য প্রয়োজনীয় ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ শীর্ষক প্রকল্প।

এসব প্রকল্পের বাইরে আরও চারটি প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেগুলো হচ্ছে, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সন্দ্বীপ অংশে জেটিসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ, আনোয়ারায় বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির আধুনিকরণ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায় আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন জাতিসংঘ সবুজ উদ্যান স্থাপন এবং বিদ্যুৎ বিভাগের অধীনে চট্টগ্রামস্থ বিপিসি ভবন নির্মাণ কাজের।

এদিকে নৌকা আকৃতির ৩ হাজার ৫২০ বর্গফুটবিশিষ্ট মঞ্চটিতে বসতে পারবেন প্রায় ২০০ জন নেতা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে বসবেন কারা সেটি চূড়ান্ত করবে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এসএসএফ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। কিন্তু সেই নিরাপত্তার পরও মঞ্চে থাকা নেতৃবৃন্দকে দিতে হবে আরেকটি পরীক্ষা। করোনা নেগেটিভ এলেই উঠতে পারবেন প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চে। এ ছাড়া এসএসএফের সবুজ সংকেত পাওয়া সিকিউরিটি পাস প্রাপ্তদের অন্তত ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা আগে করোনা পরীক্ষা করাবে স্বাস্থ্য বিভাগ। এদের থেকে যাদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে কেবল তারাই মঞ্চে উঠার অনুমতি পাবেন।

বার্তাবাজার/জে আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর