বাবার লাশ রেখে পরীক্ষার হলে হাবিবুর

সারা রাত বাবার লাশের পাশে বসেছিল সকালে বাবার লাশ রেখেই এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় হাবিবুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থী। সে সুসং সরকারি মহাবিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের ছাত্র। মঙ্গলবার সকালে হাবিবুর পৌরনীতি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

হাবিবুর রহমান নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বড়ইকান্দি গ্রামের বাসিন্দা মৃত হারুন রশীদ (৬০) এর ছেলে। সাত ভাইবোনের মধ্যে হাবিবুর মধ্যেম।

জানা গেছে, হারুন রশীদ উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বড়ইকান্দি গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় একজন কৃষক। দীর্ঘ সময় ধরে শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সোমবার রাতে এশারের নামায শেষে রাতের খাবার খাওয়ার পর তিনি অসুস্থবোধ করেন। রাত প্রায় সাড়ে ৯টার দিকে চলে যান না ফেরার দেশে । সারা রাত বাবার লাশের পাশে বসেছিলো ছেলে হাবিবুর। পরে সকালে জানাযা শেষে দুর্গাপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজে কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয় হাবিবুর। এদিকে এ শিক্ষার্থীর বাবার মৃত্যুতে আত্মীয়স্বজন, সহপাঠী ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

হাবিবুর রহমানের সহপাঠীরা জানান, পরীক্ষার হলে বসেও হাবিবুর কান্না করছিল। সহপাঠীরা সবাই তাঁকে সান্ত্বনা দিয়েছে। পরীক্ষা চলাকালে হাবিবুরের বাবার মৃত্যুর বিষয়টি সবাইকে আপ্লুত করেছে।

৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ফরহাদ মিয়া বলেন, হারুন রশীদ অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। তার ছেলে হাবিবুর এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। বাবার জানাযা শেষ করেই হাবিবুর পরিক্ষা কেন্দ্রে চলে যায়। বাবার লাশটা দাফনও করতে পারেনি।

সদ্য বাবা হারানো ছেলে হাবিবুর রহমান বলেন, ‍রাতে একসাথে বসে খাওয়া-দাওয়া করে সবাই গল্প করলাম হঠাৎ বাবার শরীরটা খারাপ করলো তখনই বাবা শুয়ে পড়লো বিছানায় আর তখনই বুঝতে পারি বাবা আর নেই। বাবা শুধু এটাই বলতেন পরিস্থিতি যত খারাপই হোক না যেনো পড়াশোনা চালিয়ে যায়। বাবার কথা রাখতেই বাবার দাফন রেখেই আমাকে আমার ফুফাতো ভাই পরিক্ষার কেন্দ্রে নিয়ে যায়।

রাজেশ গৌড়/বার্তাবাজার/জে আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর