শিবালয়ে চলছে চিকিৎসার নামে প্রতারনা

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় আল-এহ্সান ডায়াগনস্টিক সেন্টারে উপজেলা ইউনানী মেডিক্যাল অফিসার আশরাফুল আলম ও উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার মো. হাবিবুর রহমান বাহাদুরীকে দিয়ে চলছে সর্ব রোগের চিকিৎসা। তারা ভিজিটিং কার্ড ও প্যাডে নামের আগে ডাক্তার শব্দ ব্যাবহার করে শিশু, গাইনী, অর্থপেডিক ও মেডিসিন বিষয়ে অভিজ্ঞ লিখে বছরের পর বছর প্রতারণা করে যাচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের দালালদের মাধ্যমে বাগিয়ে আবার কোন কোন সময় তারা নিজেরাও নিয়ে আসেন এই ডায়াগনেষ্টিক সেন্টারে। তারপর শুরু হয় রোগীদের সাথে চিকিৎসার নামে টেষ্ট বানিজ্য আর প্রতারণা। তারা রোগীদেরকে প্রয়োজনীয় অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রকার টেষ্ট করিয়ে আর্থিক ক্ষতি ও হয়রানী করছে।

কোন রকম ১ বছরের কোর্স সম্পন্ন করে সর্ব রোগের টেষ্টের রিপোর্ট তৈরী করে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের মদতে গড়ে ওঠা মানহীন এ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি দালালের মাধ্যমে রোগী ধরে এনে চিকিৎসা সেবার নামে প্রতারণা করছে প্রতিনিয়ত। এই ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে প্যাথলজিক্যাল স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নেই। নেই দক্ষ টেনিশিয়ান, টেকনোলজিষ্ট ও পর্যাপ্ত ডাক্তার-নার্স।

তবুও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নাকের ডগায় থেকেও নিবন্ধন পেয়েছে আল-এহ্সান ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নবায়নও হচ্ছে। আর এর সুবাদে উন্নত চিকিৎসাসেবার নামে মানুষ ঠকিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে মানহীন এই প্রতিষ্ঠান ও স্বল্প জ্ঞানী সর্বরোগের তথাকথিত চিকিৎসক।

অফিস চলাকালিন সরেজমিনে দেখা যায়, হাবিবুর রহমান বাহাদুরী তার নিজের ডিউটি ফাঁকি দিয়ে সানজিদা নামের এক রোগী দেখছেন এই ডায়াগনেস্টিক সেন্টারে। ওই রোগী বুকে ব্যাথা নিয়ে তার কাছে আসলে সে এন্টিবেটিকসহ বিভিন্ন রকমের ঔষুধ ও টেষ্ট লিখেন। অপরদিকে ইউনানী মেডিক্যাল অফিসার আশরাফুল আলম সাথী নামের রুগীকে গাইনী চিকিৎসা দিতে দেখা যায়।

শুধু সাথী ও সানজিদা নয় বছরের পর বছর ধরে এ রকম অসংখ্য রোগীর সঙ্গে চিকিৎসার নামে প্রতারনা করে আসছেন ডায়াগনেষ্টিক সেন্টর ও নামধারী ডাক্তাররা। একাধিক ভোক্তভোগী এরকম অপচিকিৎসার হাত থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

উপজেলা ইউনানী মেডিক্যাল অফিসার আশরাফুল আলম বলেন, আমি রোগী দেখে ২০০ টাকা ভিজিট নিয়ে ইউনানী ঔষুধ লিখে দেই। আমি গাইনি রোগীও দেখতে পারি।

উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার মো. হাবিবুর রহমান বাহাদুরীকে নামের পূর্বে ডাক্তার লিখা যাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জানা নেই। যদি না লিখা যায় তাহলে আমার ভুল হয়েছে।

ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার ফারুক হোসেন বলেন, আমার এই প্রতিষ্ঠানে সকল প্রকার কাগজপত্র ঠিক আছে এবং অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা রোগীদের সেবা দেয়া হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.ফজলে বারী বলেন, ইউনানী মেডিক্যাল অফিসার ও উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার নামের আগে কোন ভাবেই ডাক্তার লিখতে পারে না। নামের আগে ডাক্তার লিখে যদি কাউকে চিকিৎসা দিয়ে থাকে সেটা প্রতারনার সামিল। যদি প্রমান মিলে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সজল/বার্তাবাজার/এম.এম

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর