শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে হাংরি পাবনার খাদ্য ও পণ্য মেলা

শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে হাংরি পাবনার আয়োজনে নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে খাদ্য ও পণ্য মেলা। ব্যাতিক্রমী এই মেলার আয়োজনে ভোজন প্রিয় নানা শ্রেণী পেশার মানুষের সমাগমে উৎসব মুখোর হয়ে উঠেছে মেলা প্রঙ্গণ। তৃতীয় বারেরমত সপ্তাহব্যাপী এই খ্যাদ্য ও পণ্য মেলাতে বেঁচা বিক্রিও বেশ ভালো হয়েছে। ই-কামার্স অনলাইন ভিত্তিক এই ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তারা (অফলাইনে) সরাসরি ক্রেতার কাছে পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন তারা।

চিরাচায়িত গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষের কাছে খাবারের কথা উঠলেই মনে করিয়ে দেয়া শীতের পিঠাপুলির কথা। চলমান শীতের এই মাসে কৃষকের ঘরে উঠতে শুরু করেছে নতুন ধান। নবান্নের আনন্দে ঘরে ঘরে চলছে নানা ধরনের খাবারের স্বাদ গ্রহণ। সেই গ্রাম বাংলার পিঠা উৎসব এখন আধুনিকতায় রুপ নিয়েছে। জেলার নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে হাংরি পাবনা নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ পেজের সদস্যদের অয়োজনে চলছে সপ্তাহব্যপী খাদ্য ও পণ্য মেলা। করোনা মহামারির সময়ে কর্ম হারানো আর নতুন উদ্দোমী সাহসী নারীরা ঘরে বসে শুরু করেছিলেন এই ব্যবসা। সময়ের সাথে সাথে নানা প্রতিকুলতা পেরিয়ে এখন সেই সাহসী নারীদের মধ্যে বেশিরভাগই সফল উদ্যোক্তা হয়েছেন। ঘরে বসে (ই-কমার্স) ফেসবুক পেজে অনলাইনের মাধ্যমে নিজের প্রচেষ্টা ও গ্রুপ পেজের সহযোগিতায় এখন তারা স্বালম্বি। জেলার এই রকম ৩৬ জন সফল নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে এবারের এই খাদ্য মেলার আয়োজন। মেলাতে ঘুরে ঘুরে নিজেরদের পছন্দের খাদ্য কিনছেন আবার কেউ অডার করে মেলা মাঠেই সেটির স্বাদ গ্রহণ করছেন। মেলাতে আগত দর্শক ও ক্রেতাদের জন্য থাকছে নানা ধরনের খাবার খাওয়ার প্রতিযোগিতা। অংশগ্রহণকারী নারী উদ্যোক্তার এখন চাওয়া সরকারি পৃষ্টপোষকতা। আগামী দিনে আরো বড় পরিসরে সারা দেশে এই খাদ্য ও পণ্য মেলার আয়োজন করতে চায় তারা। এই অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে বেকার নারীদের কর্মসংস্থানের একটি অন্যতম মাধ্যম হতে পারে হাংরি পাবনার গ্রুপ পেজের সদস্যরা।

মেলার উদ্যোগক্তা দেওয়ান মাহাবুব বলেন, সমাজ সেবার অংশ হিসাবে পিছিয়ে পরা নারীদের সম্মুখে এগিয়ে নেয়ার অন্যতম মাধ্যম হাংরি পাবনা। আমাদের সদস্য সংখ্যা এখন সারা বাংলাদেশে প্রায় ৮০ হাজার। এই সকল সদ্যরা নিয়মিত আমাদের পেজের মাধ্যমে পছন্দের খাদ্য সহ পোষাক ক্রয় করছে। আমরা নিজেরা অর্থদিয়ে এই মেলার করে অসছি। সরকারি সহযোগিতা দরকার আমাদের। চাকুরী পিছে না ছুটে ব্যবসা করে এখন নারীরা দেখিয়ে দিয়েছে কি ভাবে চলতে হয়। শুধু দেশের মধ্যে নয় বিদেশে আমাদের খাদ্যসহ সকল পণ্য সামগ্রী সরবরাহ করতে চায়। তাই মেলার মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরার হয়েছে নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য সামসগ্রী। বেঁচা বিক্রি বেশ ভালো। সব মিলিয়ে এবারের মেলাতে প্রায় কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে। এটা আমাদের জন্য একটি গর্ব বলতে পারেন।

শহরের বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল স্বাধীনতা চত্বরে চলতি মাসের ২২ নভেম্বর উদ্বোধন হয় এই মেলার কার্যক্রম। মেলাতে সর্বমোট ৩৬টি স্টোল রয়েছে। ২৩টি স্টোলে দেশি বিদেশী নানা ধরনের মুখরোচক ঘরে তৈরি খাবার সহ ১৩ স্টোলে রয়েছে বাহারী পোষাকের সমাহার। জেলাতে ব্যতিক্রমি এই খাদ্যমেলাতে ভীর করছেন নানা বয়সের নানা শ্রেণী পেশার ক্রেতা ও দর্শক। মেলাতে স্থানীয় ভিভিন্ন ধরনের পিঠাপুলি, দেশের বিভিন্ন জেলার ঐতিহ্যবাহী খাবার, চিকেন ফ্রাই, নানা স্বাদের কেকে, সামদ্রিক মাছ, আচার, হারবাল ও অর্গানিক প্রসাধনী সামগ্রী সহ শীত গৃস্মের পোষাক বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ১০ থেকে রাত ১০ পর্যন্ত চলছে মেলার কার্যক্রম। মেলাকে প্রাণবন্ত করতে প্রতিদিন থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নিজেদের তৈরি দেশি পণ্য নিয়ে ফ্যাশান শোয়ের ব্যবস্থা। ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ফেসবুক গ্রুপ পেজের মাধ্যমে নারীদের নিয়ে এই হাংরি পাবনার যাত্রা শুরু হয়। সময়ের সাথে সাথে এখন এই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়েছে। ২৭ (নভেম্বর) রবিবার আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে সমাপ্ত হবে মেলার কার্যক্রম।

মাসুদ/বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর