মধ্যরাত থেকে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু!

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে মা ইলিশ রক্ষা ও উৎপাদন বাড়াতে ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহণ, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়। মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে এ তথ্য জানা গেছে। আগামীকাল ৭ অক্টোবরের প্রথম প্রহর থেকে এ আদেশ কার্যকর করা হবে।

২২ দিনের এই নিষেধাজ্ঞা চলাকালে উপজেলা বিভিন্ন নদী ও সাগরে সার্বোক্ষণিক টহল দিবে পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌ-বাহিনী। এছাড়াও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসন যৌথ অভিযান পরিচালনা করবে। মা ইলিশের বিষয়ে সাসটেইনবল কোষ্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট এর আওতায় ৩ জন তথ্য সংগ্রহকারী তথ্য দিবেন। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে কমপক্ষে ১ থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর তিন মাসে উপজেলার ছয় ইউনিয়নের নদী ও সাগর মোহনায় ১০ দশমিক ৯০০ হাজার মে.টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে। গত বছরের জুলাই হতে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ইলিশ উৎপাদন হয় ২৪ দশমিক ১০২ হাজার মে.টন । এ উপজেলায় রয়েছে ১২ হাজার ৮২০ জন নিবন্ধিত এবং প্রায় ৫ হাজার অনিবন্ধিত জেলে।

এবিষয়ে উপজেলার চর মোন্তাজ এলাকার জেলে নুর মোহাম্মদ (৫০) বলেন, ‘লোকসান কাটিয়ে কেবল লাভের মুখ দেখবো এরমধ্যেই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। মাছের ডিম ছাড়া সুযোগ দিতে আমাদের কষ্ট হলেও ২২ দিন মাছ ধরা থেকে বিরত থাকবো। সংসার, ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার টাকা যোগাতে কষ্ট হবে। খাদ্যসহায়তার যে চাল দেয়া হয় তাও অপ্রতুল। ২২ দিন পরে মাছ ধরবো সে সুযোগও নেই। শুরু হবে জাটকা ধরার ওপর আট মাসের নিষেধাজ্ঞা।

কোড়ালিয়া এলাকার আরেক জেলে আফজাল হোসেন (৪৫) বলেন, আমরা ছোট বেলা থেকেই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। তবে জেলে কার্ড পাইনি। জেলে কার্ড পায় অন্য পেশার মানুষ। এইযে অবরোধ এতে যে চাল সরকার দিবে তা শুধু যাদের কার্ড আছে তারা পাবে। আমাদের যাদের কার্ড নাই তাদের কি হবে? আমাদের দিকেও সরকার একটু নজর দিলে ভালো হতো।

কোড়ালিয়া মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি সভাপতি জহির হাওলাদার জানান, মৌসুমের শুরুতে নদীতে ইলিশ তেমন ছিল না। মাছ না থাকায় জেলেরা হয়েছে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ীক ক্ষতিরমুখে পড়েছে মৎস্যঘাট সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তবে কয়েকদিন ধরে নদীতেও মাছ পাওয়া যাচ্ছে। যার ফলে মৎস্যঘাটে কিছুটা হলেও প্রাণ ফিরেছে। তবে আবার এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বেকার হয়ে কর্মসংস্থান হারাবে জেলেরা।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল হক বাবুল বলেন, ‘ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় সকল ধরনের কার্যক্রম সম্পূর্ণ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞায় মাছ ধরায় বিরত জেলেদের মাঝে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হবে শিঘ্রই।’

সাব্বির/বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর