ভোজ্যতেলে ভ্যাট সুবিধা বাড়তে পারে তিন মাস

উৎপাদন ও ব্যবসায় পর্যায়ে ভোজ্যতেলের মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট মওকুফের মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়তে পারে। ভোজ্যতেলে আমদানি পর্যায়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধার মেয়াদ শেষ হয়েছে ৩০ সেপ্টেম্বর। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা চেয়ে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী জুন পর্যন্ত এই সুবিধা না বাড়িয়ে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়নো হতে পারে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে।

শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় ও আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা বহাল রাখার ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলেও জানা গেছে।

দেশে ডলারের দাম ও বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা নিয়ে নতুন করে ভাবা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এনবিআরের ভ্যাট বিভাগের এক কর্মকর্তারা জানান, আমদানি ও স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাটমুক্ত সুবিধা বহাল রাখার বিষয়ে এনবিআর নীতিগতভাবে সম্মত। তবে ডলারের সংকট ও আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, তা পর্যালোচনা করা হবে। সেক্ষেত্রে আপাতত আরেক দফায় কয়েক মাসের জন্য ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা রাখা হতে পারে।

গত মার্চে দেশের স্থানীয় বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়তে শুরু করে। একপর্যায়ে দাম লিটারপ্রতি ২০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। বর্তমানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৯২ টাকা। সরকার ভোজ্যতেলের দাম ঠিক করে দেয়। তবে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে বেশিরভাগ সময়ই ক্রেতারা তেল কিনতে পারেননি বলে অভিযোগ আছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশে বছরে ২০ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে দুই লাখ টন স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়; বাকি ১৮ লাখ টন আমদানি করা হয়।

গত ১৪ মার্চ এনবিআর প্রজ্ঞাপন জারি করে সয়াবিন ও পাম তেলের উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং ব্যবসায় পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট মওকুফ করে। এর দুই দিন পর আমদানি পর্যায়ে ভোজ্যতেল আমদানিতে আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়। তখন এর মেয়াদ ঠিক করা হয় ৩০ জুন পর্যন্ত। পরে ৩ জুলাই মেয়াদ বাড়িয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু এরপর এনবিআর আর মেয়াদ বাড়ানোর কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করেনি।

জানা গেছে, গত ২০ সেপ্টেম্বর ভোজ্যতেলের ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল রাখার অনুরোধ জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে চিঠি দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন, পরিশোধিত ও অপরিশোধিত পাম তেলের দাম কিছুটা কমলেও ডলারের দাম বৃদ্ধির (আগে ১ ডলার সমান ৮৬ টাকার স্থলে বর্তমানে ১ ডলার সমান ১০৫ টাকা) কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে পণ্যের মূল্য আনুপাতিক হারে কমানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই স্থানীয় বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্য ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ ১ অক্টোবর থেকে বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ৩০ জুন মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের যে দাম এবং ডলারের যে পরিস্থিতি তাতে ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা প্রত্যাহার হলে তেলের দাম ১২ শতাংশ বাড়তে পারে।

বার্তাবাজার/জে আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর