ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে ফুটপাতে চাঁদাবাজীর অভিযোগ!

ঢাকার সাভারের আশুলিয়া থানাধীন ডিইপিজেড সংলগ্ন নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পুরাতন ডিইপিজেড ওভারব্রিজ থেকে বলিভদ্র বাজার পর্যন্ত ফুটপাতে অবৈধভাবে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজীর অভিযোগ এসেছে এক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে। তিনি সাভার উপজেলার স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ মন্ডল।

বিষয়টি অনুসন্ধান করে জানা যায়, ডিইপিজেডের পুরাতন জোন এলাকা হতে বলিভদ্র বাজার পর্যন্ত চার শতাধিক দোকান দেখাশোনা করে আতিক ও জাহাঙ্গীর নামের দুইজন। সেখানে টাকা তোলার জন্য রুহুল নামের একজনকে বেতন দিয়ে রাখা হয়েছে। অপরদিকে বলিভদ্র এলাকার পারমানবিক শক্তি কমিশন অফিসের সামনের ২ শতাধিক দোকান থেকে টাকা নেন কামাল নামের একজন। তারা সবাই ধামসোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ মন্ডলের লোক- এমনটা ভিডিও বক্তব্যে জানান ওই চাঁদাবাজ চক্রের আগের নিয়োগকৃত চাঁদার টাকা উত্তোলনকারী নুরন্নাহার নামের এক নারী।

গণমাধ্যমকে দেওয়া ভিডিও বক্তব্যে তিনি বলেন, এই জায়গার প্রত্যেক দোকান হতে আমি আগে প্রতিদিন ফুটপাতে ১০ টাকা ২০ টাকা করে বসাইতাম। পরে আতিক, জাহাঙ্গীর ও লতিফ মন্ডল আমারে কামলা হিসাবে রাখছে। তখন প্রত্যেক দোকান থেকে ২০০ টাকা করে উঠায়ে দিতাম। আর প্রত্যক দোকানের জন্য এডভান্স ২০ থেকে ৩০ হাজার করে টাকা দিতে হইতো। এইটা না দিতে পারলে আতিক আমারে বকাবাজি করে বলতো না উঠাইতে পারলে বাদ দিয়ে দেবে।

তিনি আরও জানান, প্রতিদিন ২০০ টাকা শুধু ফুটপাতের উপরের অস্থায়ী দোকানের জন্য। আর এর পিছনের স্থায়ী দোকানগুলো চলে মাসিক টাকার ভিত্তিতে। ওইসব দোকানের জন্য মাসে দোকান প্রতি ১০ হাজার করে টাকা নেয়া হয়। আর এদের এডভান্স নেয়া হয় দোকান প্রতি ৫০ হাজার টাকা করে। প্রতিদিন ফুটপাতের অস্থায়ী দোকান থেকে ৫০ হাজারের বেশী টাকা ওঠে, শুক্রবারে ওঠে ১ লাখ টাকা।

নুরননাহার বলেন, প্রতিদিনের এই টাকা উঠায়ে আতিক ও জাহাঙ্গীরকে তিনি দিতেন, তারা সব টাকা লতিফ মন্ডলের কাছে হ্যান্ডওভার করতো।

তবে বর্তমানে তারা তাকে বাদ দিয়েছে এই কাজ থেকে, কারণ হিসাবে নুরন্নাহার জানান, ফুটপাতের অস্থায়ী দোকান থেকে আতিক তাকে ২০০ টাকা দিন প্রতির যায়গায় আরও বাড়ায়ে টাকা নিতে বললে তিনি তাতে রাজী হন নাই বিধায় তাকে তারা বাদ দেয়।

এই চাঁদার টাকা কার কার কাছে যায় গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে নুরন্নাহার বলেন, আতিক তাকে জানিয়েছে এই টাকার ভাগ আশুলিয়া থানা ও হাইওয়ে থানায়ও যায়।

এব্যাপারে আশুলিয়া থানার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সাভার হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আজিজুল হক জানান, এসব চাঁদাবাজীর বিষয়ে হাইওয়ে থানা অবগত নয়। আর খুব শীঘ্রই আশুলিয়া থানার সাথে সমন্বয় করে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

আতিক এবং জাহাঙ্গীর এর সাথে যোগাযোগ করতে না পারায় এবিষয়ে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মুঠোফোনে স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ মন্ডল চাঁদাবাজির সাথে তিনি জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান যে, আতিক এবং জাহাঙ্গীর তার লোক নয়। একপর্যায়ে তিনি এই প্রতিবেদককে তার সাথে দেখা করার কথা জানিয়ে বলেন, ‘আপনি আসেন, দেখেন আমি তাদেরকে কি শাস্তি দেই।’

গণমাধ্যমকে এবিষয়ে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, ফুটপাত ও মহাসড়ক থেকে সকল প্রকার অবৈধ স্থাপনা অচিরেই উচ্ছেদ করা হবে। এবিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মামুন/বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর