যুবলীগের সমাবেশে দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী!

দেশব্যাপী দেশবিরোধী বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য, তাণ্ডবের প্রতিবাদের ধারাবাহিক বিক্ষোভ-মিছিল করছে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের আয়োজনে রাজধানীর শ্যামলি ক্লাব মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।

সমাবেশে মোহাম্মদপুর-আদাবরের প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হয়েছেন। এই নেতাকর্মীদের মাঝে এমনও কিছু কর্মী দেখা গেছে, যারা যুব রাজনৈতিক, এমনকি রাজনীতিতে দৃষ্টিকটু।

এদিন বিকেল ৩টায় পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী শ্যামলী ক্লাব মাঠে যুবলীগ নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। তাদের মাঝেই দেখা গেলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পোশাক পরিহিত দুই শিক্ষার্থীকে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সরাসরি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে এসেছেন। তাই পোশাক পরিবর্তনের সুযোগ পাননি।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পোশাক পরিহিত একজন পিসি কালচার হাইজিং স্কুল ও আরেকজন শেখ বজলুর রহমান কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। এছাড়া অনেক শিশু ও কিশোরদের অবস্থান দেখা গেছে, মহানগর উত্তর যুবলীগের এই আয়োজনে। তাদের বেশিরভাগেরই বয়স ১৪ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। তাদের কেউ স্কুল শিক্ষার্থী, কেউ পড়াশোনার বাইরে, আবার কেউবা কিশোর বয়সেই যুক্ত হয়েছেন বিভিন্ন পেশায়।

শাহিদুল নামের একজন শিশু। যুবলীগের ক্যাপ পরে এসেছেন অনুষ্ঠানে। তার কাছে ক্যাপ পরার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেলিম মামা দিছে। তাই পরছি।’

এদিকে যুবলীগের গঠনতন্ত্রে এখন সংগঠনের সদস্যভুক্তিতে কোনো বয়সসীমার উল্লেখ নেই। তবে বাংলাদেশের জাতীয় যুবনীতিতে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের যুবক হিসেবে ধরা হয়েছে।

বিষয়টিতে ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপকালে সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, ‘এটা নতুন না। অনেক বছর ধরেই আমরা দেখছি, তারা (রাজনৈতিক দলগুলো) পিছিয়ে পড়া বা বস্তির শিশুকে তাদের অনুষ্ঠানে নিচ্ছেন। অনেক শিশুরা টাকার বিনিময়েও যায়।’

ঢাবির এই অধ্যাপক বলেন, ‘একটি চক্র আছে, তারা টাকার বিনিময়ে রাজনৈতিক আয়োজনে লোক দিচ্ছে, শিশুদেরকেও দিচ্ছে। তবে কিছু রাজনৈতিক দল যেখানে শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করছে, কথা বলছে সেখানে যখন শিশুদের এমন উপস্থিতি আমাদের চোখে পড়ে, তখন রাজনৈতিক দলগুলোর কথাগুলো আমাদের কাছে লোক দেখানোই মনে হয়।’

রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে শিশুদের ব্যবহারকে ‘অপরাধ’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তৌহিদুল হক বলেন, কিছু বুঝে ওঠার আগেই নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে যাওয়ার ফলে এ ধরনের শিশুদের ভবিষ্যতের রাজনৈতিক বিচার-বিশ্লেষণ কমে যায়। এ ক্ষেত্রে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ প্রয়োজন বলেও মনে করছেন এই বিশেষজ্ঞ।

বার্তাবাজার/জে আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর