যুবদল নেতা শাওন নিহতের প্রতিবাদে নয়াপল্টনে বিক্ষোভ

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ যুবদল নেতা শাওন ভূঁইয়া নিহতের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত ১০ টার দিকে রাজধানী নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে কাকরাইল ঘুরে কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

বিক্ষোভ মিছিলে যুবদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক গোলাম মওলা শাহীন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, সিনিয়র সহসভাপতি ইয়াছিন আলী, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবন, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক’শ নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

মুন্সীগঞ্জ বিএনপির সদস্য সচিব কামরুজ্জমান রতন যুগান্তরকে জানান, পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন শাওন। মুন্সীগঞ্জ জেলার মীর কাদিম পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। দুই বছর আগে তিনি বিয়ে করেন। তার এক বছরের একটি শিশু সন্তান রয়েছে।

এদিকে শাওনের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন দলের নেতাকর্মীরা। এসময়ে হাসপাতালে ছুটে যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক ও জেলার সদস্য সচিব কামরুজ্জামান রতন, যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েলসহ আরও অনেকে।

এসময়ে যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু বলেন, হত্যা, গুলি আর নির্যাতন করে কোন স্বৈরাচারী সরকারই টিকে থাকতে পারেনি। এই সরকারও পারবে না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে এই সরকারের পতন ঘটবে। সেদিন এই জুলুমের বিচার হবে। প্রতিটি ফোটা রক্তের হিসেব কড়ায় কন্ডায় নেওয়া হবে। অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে শাওনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই মধ্য দিয়েই তাদের আন্দোলনকে আরো বেগবান করা হবে।

বৃহস্পতিবার ৮টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শাওন।

বুধবার বিকাল তিনটার দিকে মুক্তারপুর ফেরিঘাট এলাকায় নির্ধারিত বিক্ষোভ সমাবেশ ঘিরে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ বাধে।উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে।

বিএনপির নেতাকর্মীরাও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।পুলিশও টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি ছুড়তে থাকে।এ সময় যুবদল কর্মী শাওনসহ বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ শটগানের গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পাল্টা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সংঘর্ষ প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলতে থাকে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশকে ধাওয়া করলে পুলিশ ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে গিয়ে ও নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করে।

সংঘর্ষে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুন্সীগঞ্জ সদর সার্কেল মিনহাজ উল ইসলাম, সদর থানার ওসি তারিকুজ্জামানসহ কমপক্ষে ২৫ জন পুলিশ আহত হয়েছেন। তাদেরকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

বার্তাবাজার/জে আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর