পুলিশের হ্যান্ডকাপসহ পালালো মাদক ব্যবসায়ী, গুলিবিদ্ধ ২ পুলিশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার নুরজাহানপুর গ্রামের মন্নাফ ওরফে মনেক মিয়া (৫০) নামে এক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী পুলিশের হ্যান্ডকাপ নিয়ে পালিয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় আলোচনার তোলপাড় চলছে।

বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের নুরজাহানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এসময় মাদককারবারিদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। শীর্ষ এ মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মাদক, চুরি, ডাকাতি, হত্যা, ধর্ষণসহ নবীনগর থানায় ১৫টি মামলার রয়েছে।

গত ১৯ এপ্রিল মাদক ও দেশিয় অস্ত্রসহ তাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায় নবীনগর থানা পুলিশ। কিছুদিন আগে জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে আবারও মাদক বেচাকেনা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেন। তার ছেলে শিপন নুরজাহানপুর গ্রামের হানিফ হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। নিহত হানিফ মিয়ার বোন মামলার বাদী শিল্পী আক্তার কে মামলা উঠিয়ে নেয়ার জন্য প্রতিনিয়ত হুমকি প্রদর্শন করে আসছেন।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বাবা-ছেলে এলাকায় অবস্থান করছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মাদকসহ শীর্ষ এ মাদক ব্যবসায়ী মনেক মিয়াকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাকে হ্যান্ডকাফ লাগানো হয়। শীর্ষ এ মাদক ব্যবসায়ীকে ওই অবস্থায়ই পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় তার ছেলে শিপনসহ কয়েকজন মাদককারবারি দু’দিক থেকে পুলিশের ওপর হঠাৎ গুলি চালাতে শুরু করে। পুলিশও আত্মরক্ষায় পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় মনেকসহ হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। মাদককারবারিদের গুলিতে নবীনগর থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ সোহেল ও এসআই রনি সোরে রানার গুলিবিদ্ধ হন। হ্যান্ডকাফ নিয়ে পালানোর ঘটনায় পুলিশ তাকে হন্যে হয়ে খুঁজলেও এখনো অধরা ভয়ংকর এ মাদক ব্যবসায়ী মনেক মিয়া। এ ঘটনায় ৮ সেপ্টেম্বর রাতে মনেক সহ ৪ জনকে আসামি করে মামলা দেয় পুলিশ। মামলার বাদী নবীনগর থানার এসআই মোঃ আশরাফুল আলম।

নবীনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার জানান, মাদক ব্যবসায়ী ও ডাকাত মন্নাফ ওরফে মনেক ও তার ছেলে শিপন মাদক ও ডাকাতি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মনেককে আটক করে। পুলিশের কাছ থেকে পালাতে মনেকের হাতে থাকা ছুরি দিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। একই সময় মনেককে ছাড়িয়ে নিতে তার ছেলে শিপন ও তার সহযোগী সোহাগসহ আরও দু’জন পুলিশের ওপর গুলি ছুড়তে থাকে, পুলিশও আত্মরক্ষা করতে পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। সেই সুযোগে মনেকসহ হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় দু’পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে মাথায় গুলিবিদ্ধ এসআই রনিকে কুমিল্লা রেফার করেন।

এই ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন জানান, মাদক ব্যবসায়ী ও ডাকাত মন্নাফ ওরফে মনেক ও তার ছেলে শিপনসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান চলছে।

আক্তারুজ্জামান/বার্তাবাজার/এম আই