ভৈরবে দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ২৫

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের তিন ঘন্টাব্যাপী দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশসহ ২৫ জন আহত হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও মোটর সাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সোমবার (২২ আগস্ট) রাত ১১ পর্যন্ত  চন্ডিবের ও পুলতাকান্দায় দুই পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতদেরকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত আল-আমিন, রফিকুলসহ ছয় জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ সময় হামলায় ৫/৬টি সংখ্যালঘুর বাড়ি-ঘর ও দোকান পাট ভাংচুর লুটপাট করা হয়। খবর পেয়ে র‍্যাব ও ভৈরব থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে এ সময় পৌর মেয়রসহ উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ নেতারা ঘটনাস্থলে পৌছে সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস দিলে সংঘর্ষ থামে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, শহরের পলতাকান্দা গ্রামের রতন মিয়ার কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে চন্ডিবের গ্রামের নবী হোসেনের পুত্রসহ বখাটেরা কলেজে আসা যাওয়ার পথে প্রায়ই উত্যক্ত করতো। এ ঘটনায় পলতাকান্দা গ্রামের গোলাম হোসেনের পুত্র রাহিম তার মামাতো বোনকে উত্যক্তের ঘটনায় প্রতিবাদ করে। পরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত শনিবার রাহিম ও তার বন্ধু বায়েজিদকে ফেরীঘাটে আটক করে রিয়াদ ও তার বন্ধুরা মারধোর করে ওইদিন রাতেই বায়েজিদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে। পরে এ ঘটনায় বায়েজিদের বাবা জসিম মিয়া ভৈরব থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলেও প্রতিপক্ষ নবী হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার পুনরায় দলবল নিয়ে পলতাকান্দায় দোকান-পাট ও বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। পরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২ পক্ষের মাঝে প্রায় ৩ ঘন্টাব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

রতন মিয়া ও জসিম মিয়া জানান,তার কলেজ পড়–য়া মেয়েকে রিয়াদসহ কয়েকজন বখাটে প্রায় উত্যক্ত করতো । এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় নবী হোসেনের লোকজন হামলা চালায় এবং বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করেছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত নবী হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে ভৈরব পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভ জানান, চন্ডিবের ও পুলতাকান্দা দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৫/৬টি সংখ্যালঘুর বাড়ি-ঘর ও দোকান পাট ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।

পরে পুলিশ র‍্যাব ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে ও সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস দিলে সংঘর্ষ থামে এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, ফায়ার সার্ভিস কর্মীরার অবহেলার কারণে আগুনের ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়, পরে এক ঘন্টা সময় অতিবাহিত করে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।

এ বিষয়ে ভৈরব থানার ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, ২ পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো কেউ থানায় মামলা দিতে আসেনি। তবে সংঘর্ষে ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩০ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায়  আজ দুপরে এক‘শ ৫০ জনকে আসামি করে পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জামাল/বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর