ভাণ্ডারিয়ায় বিদ্যালয়ের সভাপতি কর্তৃক শিক্ষক-কর্মচারী লাঞ্ছিত হয়ে থানায় জিডি
পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার খাতুননেছা স্মৃতি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান আকন কর্তৃক ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অমল কৃষ্ণ হালদারসহ কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগি প্রধান শিক্ষক গত সোমবার রাতে ভাণ্ডারিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অমল কৃষ্ণ হালদার জানান, এডহক কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান আকন এর কাছে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা উত্তোলনের জন্য গত ৮ আগষ্ট সকাল ১১টায় বেতন বিলে স্বাক্ষর করার জন্য স্বাক্ষর চাইলে তিনি নানা অজুহাতে বেতন বিলে স্বাক্ষর দিতে অস্বীকার করেন।
তখন তর্ক বিতর্কের এক পর্যায়ে সভাপতি ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অমল চন্দ্র হালদার এর সঙ্গে অসদাচরণ করেন। অশ্লীল ভাষায় গাল মন্দ করেন। এ সময় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কবির হোসাইন এর প্রতিবাদ জানালে সভাপতি মজিবুর রহমান আকন ও সহযোগী মাসুদুর রহমান উত্তেজিত হয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অমল কৃষ্ণ হালদার ও সহকারী শিক্ষক কবির হোসাইনকে জীবন নাসের হুমকি দেন এবং চাকুরীচ্যুত করার ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক গত সোমবার সন্ধ্যায় ভাণ্ডারিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন। ডায়েরীতে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান আকন (৫৯) ও তার সহযোগী মাসুদুর রহমান মল্লিক (৩৫) এর নাম উল্লেখ করেন।
সভাপতি কর্তৃক শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ করায় ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য মোঃ ফারুখ হোসেন মোল্লা ও শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য প্রানেশ চন্দ্র মন্ডল পদত্যাগ করেছেন।
এদিকে বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় ওই বিদ্যালয়ের ১৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী জুলাই মাসের বেতন উত্তোলন করতে না পেরে মানবেতর জীবন যাপন করেছেন। বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক প্রাণেশ চন্দ্র মন্ডল জানান, বিনা কারণে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন বন্ধ করা অমানবিক। এ দূরমূল্যের বাজারে বেতন-ভাতা বন্ধ হলে শিক্ষক কর্মচারীরা না খেয়ে থাকবে।
বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান আকন জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান ও তার স্ত্রী শিক্ষক মাসুমা আক্তারকে নিয়ে দীর্ঘ ১৮ বছর পর্যন্ত আদালতে মামলা বিচারাধীন। বর্তমানে মামলাটি উচ্চ আদালতে রয়েছে। বর্তমানে উচ্চ আদালতে ওই দুই শিক্ষকের বেতন-ভাতা প্রদানের নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ওই দুই শিক্ষকের বেতন ভাতা প্রদানে অস্বীকৃতি জানালে তিনি বেতন-বিলে স্বাক্ষর করেননি।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, আদালতের কোন অর্ডার তিনি হাতে পাননি। তাই ১৮ বছর পূর্বে স্বেচ্ছায় পদত্যাগকৃত প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান ও তার স্ত্রী সহকারী শিক্ষক (দীর্ঘ বছর অনুপস্থিত) মাসুমা আক্তার এর বেতন-ভাতা বিল প্রস্তুত করেননি।
কাফী/বার্তাবাজার/এম.এম