বিআরটিসি বাস থেকে যাত্রী নামিয়ে জেলা মালিক সমিতির হয়রানি

যাত্রী নিয়ে ফরিদপুর বোয়ালমারী থেকে পদ্মা সেতু হয়ে গুলিস্থান ঢাকার উদ্দেশ্য ছেড়ে আশা বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বাস মালিক সমিতি।

একদিন আগে গত মজ্ঞলবার বিআরটিসি বাস উদ্বোধন করা হয়। তার পরবর্তী দিন আজ বুধবার (১০ আগস্ট) সকাল ৭ টায় ভাঙ্গা বাস টার্মিনালের কাছাকাছি বিআরটিসি বাস আসলেই বাসটি আটকে দেয়া হয়।

এদিকে বিআরটিসি বাস বন্ধ করে দেয়ার খবর বোয়ালমারীতে পৌঁছালে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিআরটিসি বাস চলাচল করতে না দেওয়ায় জেলা বাসা মালিক সমিতির রাজধানী পরিবহন নামে বাস বোয়ালমারী উপজেলায় ঢুকতে দেয়নি বিক্ষুব্ধরা, পরবর্তীতে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে এবং বাস চলাচলের সুযোগ করে দেয়।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে দাবি ওঠে বিআরটিসি বাস চলাচলের। সেই দাবির প্রেক্ষিতে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ ফরিদপুর, নগরকান্দা থেকে বাস চালু করে।

গত মঙ্গলবার বোয়ালমারী থেকে বিআরটিসি বাস চালু করে কর্তৃপক্ষ। উদ্বোধনের পরদিন বুধবার সকাল ৭টায় বোয়ালমারী বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকা গুলিস্তানের উদ্দেশে রওনা হয় বাসটি। পথিমধ্যে ভাঙ্গা বাস টার্মিনালের কাছে বাসটি আটকে দেয়। বাস থেকে নামিয়ে দেয়া হয় যাত্রীদের। ফলে চরম বিপাকে পড়েন বাসটির যাত্রীরা।

বিআরটিসি বাসের একাধিক জানান, ভাঙ্গা বাস টার্মিনালে আসার পর বেশ কয়েক ব্যক্তি বাসের চালকের কাছ থেকে চাবি ছিনিয়ে নেয়। তারা বাসের চালক ও হেলপারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। বাসের যাত্রীদের সঙ্গেও তারা অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।

বিআরটিসির (কুমিল্লা ডিপো) ম্যানেজার (অপারেশন) মো. কামরুজ্জামান জানান, বিআরটিসির বাস বন্ধ করার কোনো এখতিয়ার নেই জেলা বাস মালিক গ্রুপের। পরিবহন সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার বন্ধপরিকর। সেই হিসাবে বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করা ঠিক হয়নি।

এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মোরতুজা আলী তমাল বলেন, বোয়ালমারী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বিআরটিসি বাসটি ভাঙ্গার মোড়ে (ভাঙ্গা হাইওয়েতে) আটকে সব যাত্রীদের নামিয়ে দেয় ফরিদপুর বাস মালিক সমিতি। এ সময় বিআরটিসির সুপারভাইজারকে মারধর করা হয়।

বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকী বলেন বলেন, আমারা বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগ। আমাদের নেতা আব্দুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গাবাসীর জন্য দুটি বিআরটিসি এসি বাস সার্ভিস এনে দিয়েছিলাম। সার্ভিসটি চালু করার সময় অনেক বাধা এসেছিল। সেগুলো মোকাবিলা করে বাস নিয়ে আসি। বিআরটিসি বাস চলুক বা না চলুক আমাদের ব্যক্তিগত কোনো লাভ-ক্ষতি নেই। আমরা ছাত্রলীগ করি ব্যবসা করি না।

ফরিদপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান বলেন, বিআরটিসি সারা দেশের ২৩ রুটে যে রুট পারমিট দিয়েছে সেখানে কোনো উপজেলার অনুমতি নেই। তা ছাড়া জেলা বাস মালিক গ্রুপ থেকেও অনুমতি নেয়নি। ফলে আমরা বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, বাস চলাচলের বিষয়ে একটি ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। এখনো এ ব্যাপারে বিআরটিসি আমাদের কাছে কোন অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ দায়ের করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিবো। বেপারটি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে আশা করছি এ সমস্যাটির সমাধান হয়ে যাবে।

শিশির/বার্তাবাজার/এম.এম

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর