তরুন উদ্যোক্তা ডিজিটাল মার্কেটার আহমেদ শাহীন

কর্মসংস্থান সংকটের চলতি সময়ে চাকরির আশায় বসে না থেকে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে মাত্র ২৩ বছর বয়সেই ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছেন আহমেদ শাহীন। নিজে স্বনির্ভর হওয়ার পাশাপাশি অসংখ্য তরুণের জন্য কাজের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। তার সফলতা দেখে এখন আরও অনেক তরুণই এই পেশায় আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

আহমেদ শাহীন প্রথম থেকেই নতুন কিছু করতে আগ্রহী ছিলেন। তার কঠিন পরিশ্রম ও লক্ষ্য আজ সফলতার দ্বারপ্রান্তে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। অল্প বয়স থেকেই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজ শুরু করেন তিনি। তিনি Ahmed Shaheen নামে তার ফেইসবুক আইডি, আপওয়ার্ক ডটকম, ফাইবার ডটকম এবং ফ্রিল্যান্সার ডটকম এর মাধ্যমে কাজ করে থাকেন।

জানা যায়, আহমেদ শাহীন যখন অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। তখনই টুকটাক আয়ও করতেন। প্রথমে শিখে নেন পড়াশোনার পাশাপাশি হাতের স্মার্টফোন দিয়ে অনলাইনে কিভাবে আয় করা যায়। ইউটিউবে সেসব ভিডিও দেখতে দেখতে শিখে নেন গুগল অ্যাডসেন্স কিভাবে করতে হয়। এরপর ওয়েব ডিজাইন আর ডিজিটাল মার্কেটিংও শিখে নেন। শাহীনের ‘ক্লাউড সার্ভিস বিডি’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি ফেসবুকের জন্য কন্টেন্ট তৈরি ও বিভিন্ন ধরনের এজেন্সির হয়ে কনটেন্ট প্রজেকশন এবং ডিস্ট্রিবিউশনের মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং করেন। আর এখন তিনি প্রতিমাসে বেশ ভালো টাকা আয় করেন।

শুধু নিজেই অনলাইনে স্বনির্ভর হননি, গত কয়েক বছরে অনেক মানুষকে বিনা মূল্যে ফ্রিল্যান্সিং শিখিয়েছেন। স্বপ্ন দেখেন নিজের প্রতিষ্ঠানকে বড় করে বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবেন। এ ছাড়াও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডে যুক্ত রয়েছেন।

আহমেদ শাহীন জানান, সারা বিশ্বেই এখন ডিজিটাল মার্কেটিং অত্যন্ত জনপ্রিয়। বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। দেশের আইসিটি সেক্টরে আশাতীত উন্নয়নের ফলে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। নামকরা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্যের ব্র্যান্ডিং করতে ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবহার করে গ্রাহক বা ভোক্তার কাছাকাছি পৌঁছাচ্ছে। যে কারণে ডিজিটাল মার্কেটিং খাতটিতে প্রচুর পরিমাণে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।

তবে আমাদের চিন্তা ভাবনা পরিবর্তন করা উচিত, কম বয়সী হলে কম জানবে এটা ঠিক না। কম বয়সী হলে নতুন কিছু আবিষ্কারের মেতে ওঠে এই তরুণরা এটি নতুন কথা নয়, ইতিহাস সাক্ষী তরুণরা এই বিশ্ব বাজারে অনেক বড় ভূমিকা রেখেছে। তাই সবাইকে আমি তরুণদের পাশে থাকার আহ্বান জানাই। বড়রা সঠিকভাবে সাপোর্ট দিলে তরুণরা অবশ্যই সাফল্য পাবে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার পাশাপাশি কেবল দক্ষতাই পারে বেকারত্ব দূর করতে। যে কোনো একটা সেক্টরে দক্ষ হতে না পারলে আপনি বাংলাদেশের সম্পদ নয়, বরং বোঝা।

কর্মসংস্থানের জন্য নিজেদের তৈরি করতে হবে। আমরা যদি নিজেকে তৈরি না করি। তাহলে সে শূন্যতায় অন্য কেউ এসে জায়গা করে নেবে- এটাই স্বাভাবিক।

একজন ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে শাহীন বিশ্বাস করেন সফলতার কোন শর্টকাট পথ নেই। মানুষ নিজের সততা, একাগ্রতা, কাজ এবং পরিশ্রম দিয়ে সফল হয়ে উঠে। যেখানে মানুষের কাজের কোনো সততা নেই সেখানে কাজের প্রকৃত সম্মান পাওয়া যায় না। এবং প্রকৃত সফলতা পাওয়া যায় না। তাই প্রতিটি মানুষের সততা ঠিক রেখে কাজ করা উচিত। পরিশ্রম মানুষকে সফলতার চূড়ায় নিয়ে যায়। সততা ও ধৈর্য ধরে পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই।

ডিজিটাল চ্যানেল ব্যবহার করে পণ্যের প্রমোশন করাই হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। সোশ্যাল মিডিয়া, সার্চ ইঞ্জিন, ইনফ্লুয়েন্সার্ মার্কেটিং- এসবই ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্তর্ভুক্ত। প্রথাগত চাকরির বাজারে ছুটতে ছুটতে জীবনের অর্ধেক সময়টাই পার হয়ে যায় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের। তাই বর্তমান সময়ে তাল মিলাতে চাইলে প্রথাগত চিন্তাভাবনা ছেড়ে ভাবতে হবে নতুন কিছু। এই দিক থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং একটি সম্ভাবনাময় পেশা।

তারিকুল/বার্তাবাজার/এম.এম

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর