সরকারি কর্মকর্তা কানাডায় শ্যালকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে পালিয়েছেন

স্ত্রীর বড় ভাইকে দেখতে দুই মাসের ছুটি নিয়ে কানাডা গেছেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কর্মকর্তা আবদুল খালেক। তবে ৯ মাসেও দেশে ফিরে আসেননি তিনি। যোগাযোগ করা যাচ্ছে না তার সাথে। দেশে আর ফিরবেন কী না তা কেউ জানে না।

আবদুল খালেক বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) অধীনে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করতেন।

তার বিরুদ্ধে বেবিচকে তদবির ও নিয়োগ বাণিজ্যের হোতা হিসেবে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও এয়ারলাইন্স থেকে অন্তত শতকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে।

বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, আবদুল খালেক ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর ২ মাসের জন্য ছুটি চেয়ে বেবিচকে আবেদন করেন। ছুটির কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন ‘স্ত্রীর বড় ভাইকে দেখতে বহিঃবাংলাদেশ (কানাডা) গমন’। ছুটি মঞ্জুর হওয়ার পর তিনি ১২ নভেম্বর দেশত্যাগ করেন।

২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি আবদুল খালেক কানাডা থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ডাকযোগে একটি ‘অবগতিপত্র’ পাঠান। এতে তিনি উল্লেখ করেন, তিনি অসুস্থ। আরও কিছুদিন কানাডা থাকবেন।

তবে তিনি কী রোগে আক্রান্ত, কতদিনের ছুটি চান, কবে নাগাদ দেশে ফিরবেন এসব বিষয়ে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি অবগতিপত্রে।

অনুমতি না নিয়ে দেশের বাইরে ৬০ দিনের বেশি ছুটি কাটানোর ঘটনাকে সরকারি কর্মচারী প্রবিধানমালায় একে ‘পলায়ন’ বলা হয়।

বেবিচক সূত্র জানায়, ছুটি নেওয়ার সময় আবেদনপত্রে খালেক অবস্থানকালীন ঠিকানা হিসেবে কানাডার টরন্টোর স্কার্বো এলাকার ট্রুডেল স্ট্রিটের ঠিকানা দেন। তবে সেই ঠিকানায় যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি তাকে। এছাড়াও তিনি কানাডার একটি ফোন নম্বরও দিয়েছিলেন। আবদুল খালেককে সেই ফোনে সরাসরি ও হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি।

সম্প্রতি ছুটির বিষয়ে তাকে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন বেবিচকের সদস্য (প্রশাসন) মো. মিজানুর রহমান। তবে উত্তর না আসায় দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগস্টের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে উত্তর না দিলে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করবে বেবিচক।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘বেবিচকের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাইরে অবস্থান করছেন বলে শুনেছি। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হচ্ছে। তদন্তের পর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘এর আগেও বেবিচকের একজন কর্মকর্তা এভাবে বিদেশে অবস্থান করেছিলেন। তাকে আমরা পদাবনতি দিয়েছি। আইন অনুযায়ী আমরা চাকরিচ্যুতও করতে পারি।’

আবদুল খালেকের বাড়ি কক্সবাজারের দক্ষিণ বাহাড়ছড়ায়।

বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর