পিরোজপুর গাড়ি চালকের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ

পিরোজপুর টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউট এর গাড়ি চালক জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় পিরোজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার ( ৫ জুন) ভুক্তভোগী হালিমা বেগম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মোঃ জামাল হোসেন মঠবাড়িয়া উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড কবুতরখালী গ্রামের মৃত কাসেম আলী হাওলাদারের পুত্র। কাসেম হাওলাদার পানি উন্নয়ন বোর্ডে চাকরি করতেন।

জানা গেছে,২০০৪ সালের দিকে জামাল হোসেনের সাথে মুসলিম শরিয়ত মোতাবেক হালিমার বিবাহ হয়।হালিমা পার্শ্ববর্তী বুখইতলা বান্ধবপাড়া গ্রামের মজনু বেপারীর মেয়ে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) পারিবারিক ঝগড়া নিয়ে হালিমাকে বেধড়ক মারধর করে স্বামী জামাল হোসেন।খবর পেয়ে হালিমার মা বাবা তাকে উদ্ধার করতে জামালের বাড়িতে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে তারাও লাঞ্ছিত হন। এরপর স্থানীয়দের সহযোগিতায় তারা হালিমাকে উদ্ধার করে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান এবং বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করেন।

হালিমা জানান,আমার স্বামী জামাল হোসেন কথায় কথায় আমাকে ও আমার মেয়েকে মারধর করে।কথায় কথায় তালাক দেয়। বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে বলে।আমার বৃদ্ধ শ্বাশুড়িও আমাকে মানসিক নির্যাতন করে। বাড়ি থেকে আমাকে বের করে দিয়ে তার ছেলেকে আরেকটি বিবাহ করতে বলে।

জামাল হোসেন ও হালিমার মেয়ে ১০ম শ্রেনীর ছাত্রী জান্নাতি আক্তার মিম জানান, যখন থেকে বুঝতে শুরু করেছি তখন থেকেই দেখি আব্বু আম্মুকে মারধর করে। নানা বাড়ি থেকে টাকা আনতে বলে।কয়েক মাস পূর্বে আমার বাবা টর্স লাইট দিয়ে এক পিটানে আমার একটি হাত ভেঙে ফেলে। ১৫ দিন ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম।দেড় মাস ধরে হাত ব্যান্ডিস করা ছিল। এখন আবার মায়ের পা ভেঙে দিয়েছে।

হালিমার বাবা মজনু বেপারী জানান,আমার মেয়েকে শ্বাশুড়ি জ্বালায়,জামাই জ্বালায়।জামাই’র ঘর তুলতে টাকা দিয়েছি,চাকরিতে টাকা দিয়েছি,ঘরের মালামাল কিনতে টাকা দিয়েছি। এখনও টাকা চায়।টাকা না দিলে আমার মেয়ের ওপর নির্যাতন চালানো হয়।

জামাল হোসেন জানান,পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন তালুকদার একাধিকবার শালিসি করেছেন। আমার স্ত্রী হালিমা বেগম আমার বৃদ্ধ মাকে মারধর করে।ঘটনার দিনও মারধর করেছে।আমার মাকে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

জামালের মা ৭৫ বছরের বৃদ্ধা জবেদা খাতুন জানান,আমি আমার স্বামীর পেনশনের টাকা পাই। টাকা উত্তোলন করে জামালের স্ত্রী আমার পুত্রবধু হালিমাকে দিতে হবে। না দিলে ওই পুত্রবধু আমাকে মারধর করে। ৩০ জুন বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে এবং বিকাল ৩টার দিকে দুই দফায় আমাকে মারধর করেছে হালিমা।মারধরের কারনে ওইদিন একাধিকবার বমি করেছি। মঠবাড়িয়া হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্হ হয়েছি।

এ ব্যাপারে এ্যাডভোকেট সৈয়দ আশিক আহমেদ জানান, জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে পিরোজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে মামলা হয়েছে। ৫ জুলাই (মঙ্গলবার) হালিমা বেগম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে মঠবাড়িয়া থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

বার্তাবাজার/এম.এম 

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর