প্রেমের নৃশংস বলি ১৫ বছরের কিশোর ! ডিবির হাতে গ্রেপ্তার আসামি

ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলার দাদরা গ্রামের পঙ্গুয়াই উমেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সেপ্টি ট্যাংকে গতকাল ৫ জুলাই ১৫ বছর বয়সের এক কিশোরের মরদেহ পাওয়া যায়। পরে খবর পেয়ে তারাকান্দা থানা পুলিশ ট্যাংক হতে মরদেহ উত্তোলন করে।

জানা যায়, মরদেহটি সামাদের (১৫), তার পিতা-মোঃ শাহজাহান মিয়া, সাং-চানুর মোড়, দাদরা, থানা-তারাকান্দা, জেলা-ময়মনসিংহ। সংবাদ পেয়ে সামাদ (১৫) এর পিতা-মাতা ও পরিবারের লোকজন এসে মরদেহ শনাক্ত করে। খুনের শিকার সামাদ (১৫) পেশায় একজন অটোরিক্সা চালক ছিলেন। পরে তারাকান্দা থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিল কলেজের মর্গে প্রেরণ করে।

মৃত সামাদ (১৫) এর পিতা-মোঃ শাহজাহান মিয়া অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে তারাকান্দা থানার মামলা নং-০৪, তারিখ-০৫/০৭/২০২২ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়। খুনের রহস্য উদ্ঘাটন ও হত্যাকারীদের গ্রেফতারের অভিযানে তারাকান্দা থানা পুলিশকে সহায়তার জন্য পুলিশ সুপার ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কে নির্দেশ প্রদান করেন। ডিবি পুলিশ হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন ও ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে তারাকান্দা ও ফুলপুর এলাকা হতে ৪ জনকে আটক করে। ঘটনাস্থলের পাশ্ববর্তী রাস্তার পাশে নিহত সামাদ (১৫) এর চালিত অটোরিক্সাটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আটককৃত আসামি মোঃ রবিন মিয়া (১৯) নিহত সামাদ এর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। বন্ধুত্বের সুবাদে সামাদ রবিনদের বাড়ীতে বিভিন্ন সময় যাতায়াত করত। রবিন ও রোহানের ছোট বোন আকলিমা (১৩) এর সাথে সামাদ (১৫) এর অন্তরঙ্গ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সামাদ (১৫) ও আকলিমা এর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক কোনোভাবে ফেরাতে না পেরে আসামি রবিন ও রোহান সামাদ (১৫) কে হত্যার পরিকল্পনা করে। ৪ জুলাই সন্ধ্যা ৬ টায় সামাদ (১৫) এর অটোরিক্সায় চড়ে আসামি রবিন, রোহান ও নাঈম বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে সময়ক্ষেপন করে। পূর্ব পরিকল্পনা মতে আসামি শাহীন ও পলাতক ২ জন আসামি পঙ্গুয়াই উমেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে অপেক্ষা করে। সামাদ (১৫) এর অটোরিক্সায় চড়ে রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টায় রবিন, রোহান ও নাঈম স্কুলের নিকট পৌঁছিলে আসামিরা অটোরিক্সাটি রাস্তার পাশে রেখে সামাদ (১৫) কে স্কুলের পিছনে ঝোঁপঝাড়ের আড়ালে নিয়ে গিয়ে প্লাষ্টিকের রশি ও জালের টুকরা দিয়ে সামাদের গলায় পেচিয়ে ও নাক, মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ পঙ্গুয়াই উমেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সেপ্টি ট্যাংকির মধ্যে ফেলে দিয়ে আসামিরা পালিয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত পলাতক আসামিদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামিরা হল- ১। মোঃ রবিন মিয়া (১৯), পিতা-মোঃ আলাল উদ্দিন, মাতা- মোছাঃ সেলিনা খাতুন, সাং-দাদরা, থানা-তারাকান্দা, জেলা-ময়মনসিংহ। ২। মোঃ রোহান মিয়া (২৪), পিতা-মোঃ আলাল উদ্দিন, মাতা-মোছাঃ সেলিনা খাতুন, সাং-দাদরা, থানা-তারাকান্দা, জেলা-ময়মনসিংহ। ৩। মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান নাঈম (১৯), পিতা-মোঃ শাহজাহান উদ্দিন, মাতা-মোছাঃ রোকেয়া খাতুন, সাং-হাটপাড়া, থানা-তারাকান্দা, জেলা-ময়মনসিংহ। ৪। মোঃ শাহীনুর ইসলাম (২২), পিতা- মোঃ সিরাজুল ইসলাম, মাতা-মোছাঃ সাহিদা বেগম, সাং-পুঙ্গুয়াই, দক্ষিনপাড়া, থানা-তারাকান্দা, জেলা-ময়মনসিংহ।

রাজিব/বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর