লোডশেডিং হওয়ার কারণ জানালেন প্রধানমন্ত্রী

সারাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়ার পর লোডশেডিং মোটামুটি বিদায় নিয়েছিল। বিদ্যুৎ বিভ্রাট হতো না বললেই চলে। তবে সম্প্রতি দেখা গেছে সারাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেশব্যাপী বড় মাত্রায় কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এর ফলে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েকদিন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

গত এক যুগে বিদ্যুৎ খাতে নানা পদক্ষেপের পরও বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতির কারণে লোডশেডিং ফিরে আসার পর তীব্র ক্ষোভের মধ্যে এই সংকটের কারণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্ববাজার পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাসসহ বিদ্যুৎ তৈরির উপকরণের দাম বেড়ে গেছে।

সেই সঙ্গে পরিবহনব্যবস্থায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশেই বিদ্যুতের জন্য হাহাকার তৈরি হয়েছে।অনেক উন্নত দেশে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে জানিয়ে এমন পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে মিতব্যয়ী ও সঞ্চয়মুখী হওয়ার আহ্বানও রাখেন সরকারপ্রধান। সঞ্চয়ী হওয়া ও আবাদি জমিগুলোতে কিছু না কিছু পণ্য উৎপাদন করা হলে সংকট মোকাবিলা সম্ভব হবে বলেও মনে করছেন তিনি।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সকালে ঢাকা সেনানিবাসের পিজিআর সদরদপ্তরে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন সরকারপ্রধান।

পিজিআর সদরদপ্তরে মঙ্গলবার সকালে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা বলেন, ‘একদিকে করোনার একটা অভিঘাত, তার ওপরে এসেছে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ। যার ফলে আজকে সমগ্র বিশ্বে যেমন তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, অনেক দেশে এখন বিদ্যুতের জন্য হাহাকার।

‘আর সেই ক্ষেত্রে আমি আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমগ্র দেশবাসীকে অনুরোধ করব, বিদ্যুৎ আমরা সবার ঘরে পৌঁছে দিয়েছিলাম এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সবাই পাচ্ছিল। কিন্তু এখন আন্তর্জাতিক বাজারে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে উপকরণগুলো, সেগুলোর দাম অত্যধিক বৃদ্ধি পেয়ে গেছে। যেমন ডিজেলের দাম বেড়েছে, তেলের দাম বেড়েছে, এলএনজির দামসহ সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। কয়লা এখন প্রায় পাওয়াই যায় না।’

বিদ্যুৎ বিভাগ গত কয়েক বছরে লোডশেডিং শব্দটা ব্যবহার করত না। তারাই এখন লোডশেডিংয়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছে। দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আর না কেনার কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এ জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হবে জানিয়ে তিনি দুঃখও প্রকাশ করেছেন।

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে সরবরাহ সংকটের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আগের মতো জাহাজ চলাচল করতে পারছে না। বা সমস্ত উৎপাদন, আমাদের দেশে না সব দেশের প্রত্যেকটা জিনিসের এখন ঘাটতি, এই সমস্যাটা দেখা দিয়েছে।’

প্রসঙ্গত, বিগত এক সপ্তাহ ধরেই সারা দেশেই বিদ্যুতের যাওয়া-আসা বেড়েছে। রাজধানীতেও দিনে কয়েক ঘণ্টা পরপর লোডশেডিং হচ্ছে। জেলা শহরগুলোতে সমস্যা আরও প্রকট। যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে, সেটির ভার সবাই মিলে ভাগ করে নেয়ার অনুরোধও করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘সেখানে আমরা যদি একটু সাশ্রয় করে চলি, মিতব্যয়ী হই এবং নিজেরা নিজেদের সঞ্চয়টা বাড়াতে পারি, তাতে যেকোনো সমস্যা মোকাবিলা করা যাবে।

বার্তাবাজার/এম.এম

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর