সিলেটে কমছে বন্যার পানি,বাড়ছে পানিবাহিত রোগ ব্যাধি

সিলেটে সম্প্রতি সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যার বর্তমান পরিস্থিতি উন্নতির দিকে রয়েছে। ইতোমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে লক্ষাধিক বানভাসি লোকজন ফিরছেন আপন গৃহে। কিন্তু অনেকের ঘর বানের জলে ভেসে গেছে অনেকের নেই মাথা গুজার আশ্রয়। তবুও আপন ঘরখানা মেরামতে বানভাসি মানুষ আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বন্যার পানি কমলেও বাড়ছে পানি বাহিত নানা রোগ ব্যাধি। প্রায় ১০ লাখ বানভাসি মানুষ নানা ধরনের রোগে ভুগছেন।

সিলেট স্বাস্থ্য অফিস জানিয়েছে, বানভাসির চিকিৎসা সেবা দিতে চার শতাধিক মেডিক্যাল টিম কাজ করছে বন্যা দুর্গত এলাকায়।আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশ শিশু ও নারী।এসব রোগ ব্যাধির মধ্যে বমি, জ্বর, সর্দি,কাশি, ডায়রিয়া, গুটি বসন্ত, চর্মরোগসহ নানা ধরনের রোগে ভুগছেন তারা।

বন্যা কবলিত কোম্পানীগঞ্জের ফুল মিয়া জানান, বন্যার পঁচা পানি পায়ে লাগলে ভীষণ খাঁজ হয়। আঙ্গুলের চিপায় সাদা হয়ে ঘাঁ হয়ে যাচ্ছে।

চর্মরোগে আক্রান্ত তছলিমা জানান, আমার কোনদিন চর্মরোগ ছিল না। বন্যার এই কয়েকদিন বাধ্য হয়েই বাড়ীর আশপাশে চলতে গিয়ে শরীরে লেগেছে, বন্যার পানিতে গোসল করতে হয়েছে, খেতে হয়েছে। কিন্তু এখন দেখছি আমার চর্মরোগ হয়ে গেছে।

তিনি আরও জানান, আমার ছয় মাস বয়সের বাচ্চার গায়ে ছোট ছোট লাল ফুরি হয়েছে। আজ ভ্রাম্যমাণ ডাক্তার দেখিয়েছি,তারা দেখে সামান্য ওষুধ দিয়েছেন। এভাবেই বানভাসি নারী ও শিশু বেশীরভাগ নানা রোগে আক্রান্ত।এছাড়া সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেক সংবাদকর্মীও পানি বাহিতরোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।চ্যানেল আই সিলেট এর রিপোর্টার সাংবাদিক সাদিকুর রহমান সাকি লিখেছেন,”বন্যার শুরু থেকে আছি বানভাসি মানুষের সাথে। ফলস্বরূপ ঘা হয়ে গেছে পায়ে, হাঁটতে পারছি না। ভাবলেই ঘা শিউরে ওঠে এখনো যারা ২৪ ঘন্টা বানের জলে কাঁদা মাটির সাথে লড়াই করছেন তাদের অবস্থা কি? শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ, সর্বোপুরি বন্যাক্রান্ত মানুষের কষ্ট সীমাহিন ও বর্ণনাতীত।”

স্থানীয় বানভাসি বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে আরও জানা গেছে, দিন দিন তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে, ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধা জানান, বন্যার পানি তাকে পান করতে হয়েছে, এ পানি দিয়ে তাকে গোসল করতে হয়েছে, পয়ঃনিস্কাশনের কাজ সারতে হয়েছে।

এসময় বিকল্প কিছু ছিলোনা। কিন্তু তারপর হতে তার শরীরে অবশ অবশ ভাব রয়েছে, শরীরে খাঁজ শুরু হয়। রাতে ঘুমাতে পারেন না। পা ঘা হয়েছে। তবে চিকিৎসা পাচ্ছেন কিনা এমন কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, কিছুটা চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়।

সাইফুল/বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর