পদ্মা সেতু নিয়ে তিন তারকার মন্তব্য

বাংলাদেশের বুকে সবচেয়ে বড় অবকাঠামোর নাম পদ্মা সেতু। দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর শেষে শনিবার (২৫ জুন) দুপুর ১২টায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সাফল্যের সাক্ষী হতে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শোবিজের অনেক তারকাই হাজির হন।

এখন থেকে পদ্মা পার হওয়ার দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ সারাজীবন পদ্মা সেতুর সুবিধা ভোগ করবেন। এই তালিকায় আছেন দেশের নামকরা সব তারকারাও। অনেকেরই জন্মস্থান দক্ষিণাঞ্চলে। যারা দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে মাঝে মাঝে যেতেন গ্রামের বাড়িতে। নানা সমস্যা থাকায় তাই অনেক সময় মন চাইলেও যেতে পারতেন না সময়ে অসময়ে। পদ্মা সেতু হওয়ায় এবার সেই দুঃখ ঘুচে গেছে তাদের। এসব নিয়েই আলাপ করছেন তারা।

i. জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া : খুলনার জন্মগ্রহণ করেন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় আন্তার্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মডেল-অভিনেত্রী পিয়া। আর তাইতো পদ্ম সেতু হওয়া তিনি বেশ ভাবতে ভাবতেই পদ্মা সেতু হয়ে গেলো! সব মিলিয়ে খুলনার মেয়ে হিসেবে এই সেতুটি আমার কাছে মনে হয় রাষ্ট্রীয়ভাবে সর্বোচ্চ প্রাপ্তি। তারচেয়েও বড় গর্ব, সেতুটি আমাদের টাকায় হয়েছে। এটাও বাস্তবতা, টাকা থাকলেই সবকিছু হয় না। এটি বাস্তবায়ন করার মানসিকতা লাগে। সেই সূত্রে শত বাধার মুখেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেটা করে দেখিয়েছেন। তার জন্য ধন্যবাদ ও ভালো।

আমার এখনও মনে পড়ে, ১৪ বছর আগে যখন খুলনা থেকে ঢাকা এসেছিলাম, তখন মহাখালী ফ্লাইওভারটাও ছিল না। চোখের সামনে সেটি হলো। ঢাকার উন্নতি দেখলাম। আমাদের সবচেয়ে বড় স্থাপনা পদ্মা সেতুও হয়ে গেলো! এবার দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নটাও নিজের চোখে দেখতে চাই। মংলা পোর্ট, সুন্দরবন, কুয়াকাটা- সবকিছু বদলে যাবে ক্রমশ। আশা রাখি আমরা ভবিষ্যতে এর ফল উপভোগ করতে পারব।

ii. তৌসিফ মাহবুব: বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব। তিনি ভোলায় জন্মগ্রহণ করেন। আর পদ্মা সেতু নিয়ে তিনিও আনন্দিত। তাই বললেন, গ্রামের বাড়ি ভোলায়। আর তাই পদ্মা সেতু হওয়ার আগেও আমি বরিশাল পর্যন্ত গিয়ে সেখান থেকে ফেরিতে করে ভোলা যেতে যেতে অনেক সময় লেগে যেতো। এখন আর সেই বাড়তি ঝামেলা কিংবা সময় নষ্ট হবে। কষ্ট হবে না আর আমার জন্মস্থানে পৌঁছাতে।

মাত্র তিন-চার ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে চলে যেতে পারবো! এটা তো স্বপ্নের মতোই লাগছে এখনও আমার কাছে। আগে গ্রামে যেতে ভাবতে হতো, এখন চোখ বন্ধ করে ছুটবো। খুব সকালে রওনা দিলে বাড়ি গিয়ে আবার ফিরেও আসতে পারব খুব বেশি তাড়া থাকলে ঢাকায়। আমার ও আমাদের এই দিন বদলে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ যারা এই সেতুটি নির্মাণে জড়িত ছিলেন তাদের প্রতি জানাই অসীম কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।

iii. জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী: পিরোজপুরে জন্ম নেওয়া ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৮’র বিজয়ী জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী। বর্তমান সময়ে বেশ আলোচিত একজন অভিনেত্রী তিনি। সময়ের এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী ফেরির ভয়ে বছরের পর বছর বাড়ি যেতে পারতেন তিনি। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এমনও হয়েছে যে বিমানে উড়ে যশোর গিয়েছি, সেখান থেকে বাড়ি গিয়েছি। এখন আমার জন্য বাড়ি যাওয়া খুব সহজ হয়ে গেল। আমি দারুণ খুশি।

এখন যদি একদিন ছুটি পাই তাহলে মনে হয় গ্রামের বাড়িতে বাবা-মায়ের কাছে চলে যাবো। কারণ, আমি জানি আমাকে আর ১২-১৪ ঘণ্টা রাস্তায় কাটাতে হবে না। এটা ভাবতেই আমার কাছে খুব ভালো লাগছে। তাই ধন্যবাদ জানাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সেতুটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিয়োজিত প্রতিটি মানুষকে। যাদের মাধ্যমে এমন একটি স্বপ্ন বাস্তবায়ন হলো। কৃতজ্ঞ সবার প্রতি।

প্রসঙ্গত, বিশ্বের খরস্রোতা নদীর তালিকায় আমাজনের পরেই পদ্মার অবস্থান। এমন খরস্রোতা নদীর ওপর বিশ্বে সেতু হয়েছে মাত্র একটি। তাই সেতুকে টেকসই করতে নির্মাণের সময় বিশেষ প্রযুক্তির পাশাপাশি উচ্চমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।

পদ্মা সেতুর পিলার সংখ্যা ৪২ আর স্প্যান ৪১টি। খুঁটির নিচে সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীরে স্টিলের পাইল বসানো হয়। অর্থাৎ প্রায় ৪০ তলা ভবনের উচ্চতার গভীরে পাইল নিয়ে যেতে হয়েছে। বিশ্বে এখন পর্যন্ত কোনো সেতুর জন্য এত গভীর পাইলিং হয়নি। এছাড়াও পদ্মা সেতুতে রয়েছে অত্যাধুনিক সিসি ক্যামেরা। সাধারণ আলোক সুবিধার পাশাপাশি সেতুতে আলোকসজ্জা ও সৌন্দর্য বর্ধনে রয়েছে আর্কিটেকচার লাইটিং।

বার্তাবাজার/এম.এম

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর