বন্যার্তদের পাশে ‘রক্তদানে আমরা ময়মনসিংহ’

বিগত কয়েকদিনের বন্যায় ভয়াবহতার রুপ ধারণ করেছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুনামগঞ্জ ও রংপুরের কুড়িগ্রামে। বন্যার পানি ক্রমাগত বেড়েছে। অনেকের ঘরে কোমর সমান পানি, এমনকি ঘরের চালও ডুবে গেছে। অন্য সকল জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এই জেলা দুটি। বন্ধ হয়ে পড়েছে সেখানকার মানুষের রান্না-বান্না। বন্যাকবলিত এলাকায় খাদ্য ও সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে বাসিন্দারা।

সিলেটে বন্যার শুরুতেই বন্যার্তরা নগরের বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিলে। বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে শুকনা খাবার, শিশুদের খাবার, পানি সরবরাহসহ বিভিন্ন ঔষধ করা হচ্ছে। এখনো তা অব্যাহত রয়েছে।

তারই ধারাবাহিকতায় ময়মনসিংহ অবস্থানরত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘রক্তদানে আমরা ময়মনসিংহ’ সংগঠনের একঝাঁক তরুণ ছুটে গিয়েছে সুনামগঞ্জের বন্যার্তদের কাছে। তারা কখনো হাঁটুপানি বা কোমর পানি, আবার কখনো নৌকা নিয়ে বানভাসি মানুষকে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার পৌঁছে দিচ্ছে। সিলেট নগর ও বিভিন্ন উপজেলায় বন্যায় দুর্ভোগে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে মানবিক সংগঠনটি।

বিনামূল্যে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ ও ওষুধপত্র দিচ্ছে।বিশুদ্ধ পানির অভাবে পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ায় ওই এলাকায় ওষুধ বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া বন্যার কারণে অনেকেই ঘরে রান্না করতে না পারায় তাদের মধ্যে শুকনো খাবার ও বিতরণ করা হচ্ছে।

জানা গেছে, বন্যার্তদের জন্য ময়মনসিংহবাসীর আর্থিক সহযোগিতায় ‘রক্তদানে আমরা ময়মনসিংহ’ এর স্বেচ্ছাসেবী আরিফ, ফয়সাল,নাবিল, মোশরাফ রানা,ফরহাদ,আদনান,রায়হান,রাসেল,সম্রাট ও হাসিব ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করছে।

চাহিদার তুলনায় তা খুব বেশি না হলেও তাদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা দিয়েই মানুষকে সেবা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রায় ৩ শতাধিক মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে প্রতি ব্যাগে থাকছে, চাল,ডাল,চিড়া,মুড়ি,গুড়,বিস্কুট,নাপা,মেট্রো ট্যাবলেট, স্যালাইন,পানি,গ্যাস ম্যাচ,মোমবাতি।

‘রক্তদানে আমরা ময়মনসিংহ’ সংগঠনের সভাপতি আরিফুর রহমান বার্তাবাজার কে জানান, শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চাহিদা অনেক। বন্যার্তরা সাহায্যের অপেক্ষায়। আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করছি। তবে, এরকম আরও অনেক টিম প্রয়োজন।

সংগঠনটির সহ-সভাপতি ফয়সাল রানা বার্তাবাজার কে জানান, সিলেটের সব কটি নদ-নদীর পানি ক্রমাগত বাড়ছে। এত দ্রুত লোকালয় তলিয়ে যাচ্ছে, এটা অকল্পনীয়। নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা সবচেয়ে বেশি বিপদে আছে। বরাবরের মতো মধ্যবিত্তের অবস্থা আরও করুণ। কারণ, বিপদে পড়েও তারা মুখ ফুটে কিছু বলতে পারে না, কারও কাছে হাত পাততে পারে না। এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবার সাধ্য অনুযায়ী পাশে দাঁড়ানো উচিত।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিমুল হাসান শাতিল বার্তাবাজার কে জানান, বানভাসি মানুষদের জন্য এই ত্রান সামগ্রী এর টাকা আপনারাই দিয়েছেন। যারা আমাদের সাথে শরীক হয়েছেন সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আপনারাই আমাদের প্রেরণার উৎস।

তিনি প্রবাসীদের কাছে বন্যার্ত ব্যক্তিদের পাশে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সাথে যেসকল মানবিক মানুষ এগিয়ে এসেছে এবং সমর্থন দিচ্ছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

মাসুম/বার্তাবাজার/এম.এম

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর