বন্ধুর প্রেমিকাকে তুলে আনতে গিয়ে গণপিটুনিতে প্রাণ গেল যুবকের

মাগুরার শ্রীপুরের সনগাছা গ্রামে বন্ধুর কথিত প্রেমিকা স্কুল ছাত্রীর বিয়ের ঠিক হয়ে গেলে তাকে তুলে আনতে গিয়ে গণপিটুনিতে রাসেল (২২) নামে এক যুবক মারা গেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কথিত প্রেমিকসহ ৫ বন্ধু মিলে গিয়েছিলেন রাতের অন্ধকারে মেয়ের বাড়িতে সেই মেয়েকে তুলে আনার জন্য।

কিন্তু মেয়ের পক্ষের লোকজনের কাছে মারধর খেয়ে গুরুতর জখম হয়ে বুধবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাণ হারায় ওই যুবক। এ ঘটনায় আহত হয়ে প্রেমিক মঞ্জরুল জোয়াদ্দার (২২) ও তার অপর বন্ধু রাজু আহমেদ(২৩)  বর্তমানে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নিহত রাসেল মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার তিন নম্বর শ্রীকোল ইউনিয়নের বরিশাট গ্রামের দলিল শেখের ছেলে।

ঘটনার বিষয়ে মেয়েটির বাবা দিদার মন্ডল জানান, দীর্ঘদিন ধরে পাশের গ্রাম বরিশাট এর মঞ্জরুল আমার মেয়েকে ইভটিজিং করে আসছিল। স্কুলে যাওয়ার সময় সে প্রায়ই আমার মেয়ের গতিরোধ করে প্রেমের প্রস্তাব দিতো। এজন্য বেশ কিছুদিন তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ ছিল। আমরা গরীব মানুষ তাই মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলাম। একথা জানতে পেরে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর মঞ্জুরুল সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে আমাদের বাড়িতে এসে আমার মেয়েকে জোর পূর্বক টেনে হেঁচড়ে তুলে নিয়ে যেতে উদ্যত হয়।

এ ঘটনা জানতে পেরে উত্তেজিত এলাকাবাসি রাতের বেলায় কে বা কারা তাদের মেরেছে সেটা আমরা বলতে পারব না। টনার বিষয়ে নিহত রাসেলের বন্ধু প্রেমিক মঞ্জুরুল জোয়াদ্দার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পার্শ্ববর্তী ছোনগাছা গ্রামের একটি মেয়ের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত মঙ্গলবার (১৪ জুন) মেয়েটি তার এক বন্ধুর মাধ্যমে খবর দেয় তার অভিভাবক তাকে অন্য ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দিবে।

এ খবর জানার পরে আমরা মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরে পাঁচ বন্ধু দুই মোটর সাইকেল যোগে মেয়েটির বাড়িতে গিয়েছিলাম তার সাথে দেখা করার জন্য। এসময় কিছু বুঝে উঠার আগেই মেয়ের পক্ষের লোকজন লাঠিসোটা দিয়ে আমাদের মারপিট করে। এতে আমি সহ মোট তিনজন গুরুতর আহত হই। পরে কোন মতে আমরা সেখান থেকে পালিয়ে আসি। প্রথমে আমাদের মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাসেলের অবস্থা খারাপ হয়ে গেলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বুধবার (১৫ জুন) সকালে তার মৃত্যু ঘটে। রাসেুলের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে তার চাচাতো ভাই ওমর শেখ বলেন, আমরা এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই।

তিনি বলেন, আমার ভাই রাসেলের মাথায় গুরুতর জখম হয়েছিল। জানতে চাইলে শ্রীপুর থানার ওসি প্রিইটন সরকার বলেন, প্রেমঘটিত বিষয়ে মারামারির কারণে একজনের মৃত্যুর খবর আমরা জানতে পেরেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ আমরা পাইনি। এ বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখছে।

তাছিন/বার্তাবাজার/এম.এম

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর