আবাসন প্রকল্পের নামে ইউএনও’র মাটি বিক্রির মহোৎসব

সরকারী আবাসন প্রকল্পে মাটি ভরাটের নামে চলছে মাটি বিক্রির মহোৎসব। সরকার দলীয় কতিপয় নেতার যোগসাজসে এই মাটি বিক্রির পুরোটাই নিয়ন্ত্রন করছে খোদ মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: ইমরুল হাসান।

জানা গেছে, সরকারী কোন দিক-নির্দেশনা না থাকলেও দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও দলীয় নেতারা পরস্পর যোগ সাজসে আবাসন প্রকল্পে মাটি ভরাটের নামে অবৈধ ড্রেজার ও এক্সকেভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কেটে রাত দিন সমানতালে বিক্রি করে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চকমিরপুর ইউনিয়নের চন্দ্রখোলা নিমাইখালী জলাশয়ের আশপাশের কৃষি জমি নষ্ট করে তিনটি ড্রেজার ও দুটি ভেকু দিয়ে মাটি উত্তোলন করে ইট ভাটা সহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে চক্রটি। উত্তোলিত মাটি মাহিন্দ্রা ও ট্রলি ট্রাক দিয়ে মাটি বহন করায় রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। চন্দ্রখোলা গ্রামের ভুক্তভোগীরা গনমাধ্যমকে জানায়, প্রভাবশালীরা এই মাটি ব্যাবসায় জড়িত তাই আপনারাই একমাত্র ভরসা। অচিরেই এই অপতৎপরতা বন্ধ না হলে আশ-পাশের জনগনের চলাচলে যারপর নাই দুর্দশা নেমে আসবে।

ড্রেজার মালিক বক্কর ঠাকুর বলেন, জলাশয়ে তিনটি ড্রেজার বসানো হয়েছে। একটি বন্ধ আছে বাকি দুইটি চলছে। আবাসন প্রকল্পের মাটি ভরাট না করে বাহিরে মাটি বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন অন্য জায়গায় মাটি বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে আবাসন প্রকল্পে মাটি ফেলা হচ্ছে। নিমাইখালী জলাশয়ের পাশের ভুমি মালিক কহিনুর বলেন, ড্রেজিং এর ফলে আমার কৃষি জমির মাটি ইতোমধ্যেই ধ্বসে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে জলাশয়ের পার্শ্ববর্তী কৃষি জমি হুমকীর মুখে পড়বে। কিন্তু স্বয়ং ইউএনও এবং সরকার দলীয় প্রভাবশালীরা জড়িত থাকায় আমি অভিযোগ পর্যন্ত করতে পারছি না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রবীন এক কৃষক আক্ষেপ করে বলেন, অবৈধ ড্রেজার ও ভেকু দিয়ে মাটি কাটার ফলে জলাশয়ের তলদেশ কোথাও উচু আবার কোথাও নিচু হওয়ার কারনে মাছ আহরনে ব্যাপক সমস্যার আশংকা রয়েছে। মাটি ও বালু বিক্রী করায় একদিকে যেমন সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব অন্যদিকে ড্রেজিং এর ফলে জলাশয়ের পার্শ্ববর্তী ফসলী জমি ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে।

নিমাই খালী জলাশয়ে মাটি বিক্রির ম্যানেজার দাবীদার জনৈক পারভেজ জানান, এই ব্যবসার সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, যুবলীগ নেতা হুমায়ুন কবির শাওন, দৌলতপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাসির ও সাধারন সম্পাদক মো. আতাউর রহমান জড়িত। তাই আপনারা নিউজ করে কি করবেন?

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রবিন মিয়া বলেন, আমার অফিসে সরাসরি এসে কথা বললে এ বিষয়ে আমি বক্তব্য দিব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল হাসান জানান, আমি চন্দ্রখোলা আবাসন প্রকল্পের মাটি ভরাটের জন্য নিমাইখালী জলাশয়ে ড্রেজার বসিয়ে মাটি ভরাটের কাজ করছি। এখান থেকে মাটি বিক্রির সুযোগ নেই। যদি কেউ মাটি বিক্রি করে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

আবাসন প্রকল্পের নামে জলাশয় থেকে মাটি বিক্রি কিংবা আবাসন প্রকল্পে মাটি ভরাটের বিষয়টি আপনি অবগত আছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, আমি বিষয়টি জানিনা।

সজল/বার্তাবাজার/কে এইচ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর