নেছারাবাদে বিদ্যালয় কক্ষে প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ

পিরোজপুরের নেছারাবাদে ১২২ নং উত্তর পূর্ব আরামকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজয় মিস্ত্রীকে বিদ্যালয় কক্ষে অবরুদ্ধ করে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (২৮ মে) সকালে উপজেলার জলাবাড়ী ইউনিয়নের আরামকাঠিতে এ ঘটনা ঘটে।

বিদ্যলয়ের পঞ্চম শ্রেনির এক ছাত্রীকে শ্রেনি কক্ষের চাবি সরানোর অপবাদ দিয়ে মেয়েটিকে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে স্থানীয়রা অবরুদ্ধ করে রাখে। তবে প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ সদ্য বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিতে তাদের নাম না রাখায় ছাত্রীটির মাধ্যমে চাবি সরিয়ে শ্যামল মিত্রর লোকজন তাকে (প্রধান শিক্ষক) অবরুদ্ধ করে রাখে।

এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষা কর্মকর্তা মো: ইউসুফ হোসেন ও সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা মো: মজনু মোল্লা এর আস্বস্তে পরিস্তিতি শান্ত হয়।

বিদ্যলয়ের পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রীটি বলেন, আমি সকালে বিদ্যালয়ে আসি। এমন সময় স্যার এসে আমাকে চাবি দিয়ে বিদ্যালয়ের রুম খুলতে বলেন। আমি শ্রেণি কক্ষের তালা খুলে প্রধান শিক্ষকের কাছে চাবি দিয়ে আসি। কিছুক্ষণ পর স্যার চাবি না পেয়ে আমাকে চাবির কথা জিজ্ঞাসা করে আমাকে বলে, তুমি তারাতারি চাবি বের করে দাও। চাবি না পেলে তোমাকে পুলিশে দিব বলে নানান ভয় দেখায়।

মেয়েটির মামা অপু অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাগ্নি কান্না করতে করতে বাড়ী যাচ্ছিল। আমি তাকে জিজ্ঞাস করলে ভাগ্নি সঞ্জিতা জানায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাকে চাবি চুরির অপবাদ দিয়ে পুলিশের ভয় দেখিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দিয়েছে। ওর কথা শুনে বিদ্যালয়ে যাই। গিয়ে দেখি শিক্ষক তার টেবিলের নিচে চাবি গুজে আমার ভাগ্নিকে চোর বলছে। পরে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে সেই চাবি প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে উদ্ধার করে। তাই প্রধান শিক্ষকের বিচার চাই।

প্রধান শিক্ষক বিজয় মিস্ত্রী বলেন, আমি বিদ্যালয়ে এসে মেয়েটিকে চাবি দিয়ে রুম খুলতে বলি। ও রুম খুলে আমাকে চাবি না দিয়ে বাহিরে অপুর কাছে দিয়ে দেয়। আমি চাবি না পেয়ে মেয়েটিকে একটু জিজ্ঞাসা করেছি মাত্র। এতে বিদ্যালয় কমিটির সাবেক সভাপতি শ্যামল মিত্রর লোকজন এসে জড়ো হয়ে আমাকে বিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রেখে নানান হুমকি দেয়। কমিটিতে তাদের নাম না রাখায় তারা বিদ্যালয়ে এসে আমাকে ভয় দেখানোসহ ভিবিন্ন সময় ডিস্টাব করে আসছে।

স্থানীয় নুরুল ইসলাম ও নূর মোহাম্মদ অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক বিজয় মিস্ত্রী বিদ্যালয়ে একটি অগনতান্ত্রিক কমিটি করেছেন। সেই কমিটি নিয়ে আমরা প্রতিবাদ করে আসছি। তারই জের ধরে সে বিদ্যালয়ের চাবি লুকিয়ে রেখে ছোট মেয়েটিকে চাবি চুরির অপবাদ দিয়ে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্কুল থেকে বের করে দিয়েছে। তাই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা সামছুন্নাহার সহ আরো এক শিক্ষিকার কাছে বিজয় মিস্ত্রীর উপযুক্ত বিচার চেয়েছি।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো: ইউসুফ হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি শুনে সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা মজনু মোল্লাকে এর দায়িত্ব দিয়েছি।

সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা মজনু মোল্লা বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের বেশ কিছু অভিযোগ। অভিযোগ তদন্তের বিষয়ে ইতোমধ্য একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তারপরও সে যদি মেয়েটিকে অযথা চুরির অপবাদ দেয়। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নাছরুল্লাহ/বার্তাবাজার/এ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর