শ্রীলঙ্কার সংকটের সঙ্গে দেশের তুলনা দেওয়া অযৌক্তিক: তাজুল ইসলাম

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হয়। তাই শ্রীলঙ্কার সংকটের সঙ্গে দেশের তুলনা দেওয়া অযৌক্তিক এবং বড়ই বেমানান। শুক্রবার (২৭ মে) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স : ইস্যুজ অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস অব ইমপ্লিমেন্টেশন’—এর সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তাজুল ইসলাম বলেন, কোনো দেশ নিজস্ব অভ্যন্তরীণ পলিসির কারণে অর্থনৈতিক সংকটে পড়লে একই অবস্থা যে অন‌্য একটি দেশের হবে, তা বলা অনভিপ্রেত ও অযৌক্তিক। এরকম হওয়ার কোনো সম্ভাবনাও নেই।

তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। মানুষের মাথাপিছু আয় ও ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বগুণে দেশে অনেক উন্নত দেশ ও বিদেশি সংস্থা বিনিয়োগ করছে। ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ মহাপরিকল্পনা’ নেওয়া সম্ভব হয়েছে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য।

তিনি আরও বলেন, সরকারের ডেল্টা বা ব-দ্বীপ মহাপরিকল্পনা শুধু কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ নেই এবং থাকবেও না। বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ ও একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতিতে রূপান্তরিত করাই ডেল্টা প্ল্যানের মূল লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রীর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নের ফলে আগামী প্রজন্ম একটি উন্নত দেশে পাবে। দেশ টেকসই হবে।

মন্ত্রী বলেন, নেদারল্যান্ডসের ব-দ্বীপ পরিকল্পনার আলোকে সেদেশের সার্বিক সহযোগিতায় ব-দ্বীপ পরিকল্পনাটি প্রণীত হয়েছে। এটি বাস্তবায়নের জন্য আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা প্রয়োজন। বিশ্বব্যাংক, এডিবি‌ ও জাইকাসহ উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও প্রতিষ্ঠানকে পাশে থাকার আহ্বান জানাই।

তাজুল ইসলাম জানান, ডেল্টা প্ল্যান- ২১০০ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার নেদারল্যান্ডস সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মধ্যে লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) সই হয়েছে।

এর মাধ্যমে ডাচ সরকার জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রামের রাউজান এবং যশোরের কেশবপুর পৌরসভায় পাইলটিং কার্যক্রম পরিচালনা করবে। পাইলট প্রকল্পের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পরবর্তীতে শতাধিক পৌরসভায় জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। গত কয়েক বছরে মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার হয়েছে। করোনাকালে অনেক দেশ পিছিয়ে গেছে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হেনেছে। বিশ্বব্যাপী ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে। অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। কিন্তু আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে।

পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, এসডিজি-২০৩০, ভিশন-২০৪১ সহ নানা মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে সরকার দেশ পরিচালনা করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এসব পরিকল্পনা ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ এর অংশ হিসেবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে দেশকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য। এ পরিকল্পনার দর্শন বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ অবশ্যই বিশ্বের বুকে গর্বিত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ সারা পৃথিবীতেই আছে। আমাদের দেশেও রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের সে প্রস্তুতি আছে।

পরিকল্পনা বিভাগের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম। এছাড়া পরিকল্পনা কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত ও দেশি-বিদেশি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বার্তাবাজার/জে আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর