যুবদল কর্মীকে হাতুড়িপেটা করে নেতাকে আর্তনাদ শোনাল ছাত্রদল!

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জে সামাজিক ফেজবুক মাধ্যমে যুবদলের এক নেতাকে নিয়ে আরেক নেতার স্ট্যাটাসে কমেন্ট করার জেরে সংগঠনটির এক কর্মীকে হাতুড়িপেটা করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীকে হাতুড়িপেটা তো করা হয়-ই, তার আর্তনাদের দৃশ্য ভিডিও ধারণ করে সেটি পাঠানো হয় যুবদলের ওই নেতার কাছে। আজ শুক্রবার (২০ মে) রাতে এই ঘটনাটি ঘটে।

ভুক্তভোগীর নাম নজরুল ইসলাম (৩০)। তিনি উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের সাইপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার পর যুবদলের এ কর্মী বাদী হয়ে রাজশাহীর বাগমারা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

এর আগে বুধবার (১৮ মে) যুবদলের কমিটি গঠন নিয়ে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় বাগমারা উপজেলায়। এর মধ্যেই আগ্রহীদের মাঝে ফরম বিতরণ করা হয়। এ ঘটনা কীভাবে ঘটল আর কারা করলেন, বিষয়টি নিয়ে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব রেজাউল করিম টুটুলের বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন যুবদলের আরেক নেতা। ওই স্ট্যাটাসে কমেন্ট করেছিলেন ভুক্তভোগী নজরুল।

এরপর শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোহাব্বত হোসেন তার কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে ভবানীগঞ্জে যান। সেখানে একটি চায়ের দোকানে আড্ডা দেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভবানীগঞ্জ নিউ মার্কেট নিচতলায় নজরুল ইসলামকে দেখতে পান তারা। পরে তাকে ধরে উপজেলার সদরের দক্ষিণ পাশে গ্যারেজে নিয়ে যান মোহাব্বত হোসেন ও তার অনুসারীরা। সেখানে তারা যুবদলের জ্যেষ্ঠ নেতা টুটুলের বিরুদ্ধে কেন বাজে মন্তব্য করেছেন, তা জানতে চান। এক পর্যায়ে তারা নজরুলকে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটান। নজরুল লুটিয়ে পড়ে আর্তনাদ শুরু করলে রেজাউল করিম টুটুলকে ভিডিও কল দিয়ে তা দেখান ও চিৎকার শোনান ছাত্রদলের বাসুপাড়া ইউনিয়ন শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদুল ইসলাম।

এ ঘটনার পর নজরুলকে আহত অবস্থায় ঘটনাস্থলে ফেলে চলে যান তারা। পরে স্থানীয়রা নজরুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেন। এরপর সে রাতেই বাগমারা থানায় বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ দেন নজরুল। উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মহব্বত হোসেন, সদস্য সচিব উজ্জল হোসেন, ভিডিও কল দেওয়া ফরিদুল ইসলামসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে নজরুলর জানান, তিনি আসন্ন উপজেলা যুবদলের সম্মেলনে যুগ্ন সম্পাদক প্রার্থী। বুধবার ভবানীগঞ্জে জেলার যুবদলের নাম প্রকাশ না করা ওই নেতার গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে কমেন্টের কারণে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে পেটন হয়।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, হাতুড়িপেটা করার সময় তার আর্তনাদ শোনাতে টুটুলকে ভিডিও কল দেওয়া হলে তিনি জীবন বাঁচানোর আকুতি করেন। কিন্তু তাকে রেহাই দেওয়া হয়নি। এসব ব্যাপারে জানতে যুবদলের সদস্য সচিব রেজাউল করিম টুটুল ও ছাত্রদলের মোহাব্বত হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

রাজশাহীর বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহমেদ লিখিত অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ফেসবুকে স্ট্যাটাস ও ভিডিও কলের সত্যতা এবং আলামত সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। তদন্ত শেষ হলে এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বার্তাবাজার/এম.এম

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর