চারঘাটে ২০ বছরেও এমপিওভুক্ত হয়নি স্কুল, শিক্ষকদের মানবেতর জীবন

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা সরদে অবস্থিত ৫নং চারঘাট ইউনিয়নের তালবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়টি দীর্ঘ ২০ বছরেও এমপিওভুক্ত করা হয়নি। এতে শিক্ষক-কর্মচারীসহ প্রায় ২৪ জন সদস্য মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০০১ সালে চারঘাট ইউনিয়নের তালবাড়িয়া (বাথান বাজারে) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে স্থানীয় কয়েকজন শিক্ষানুরাগীর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় তালবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়।

স্থানীয় সকলের সহযোগিতায় ও আবুল হোসেনের দেওয়া একবিঘা জমির উপর প্রথমে বাঁশ ও খরদিয়ে এবং পরবর্তীতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় ছয় রুম টিনশেড পাকা ঘর নির্মাণ করা হয়।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ অঞ্চলে শিক্ষা প্রসারে আসে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। শিক্ষার মান বৃদ্ধি, শিক্ষার হার বৃদ্ধি, পরীক্ষার ঈর্ষণীয় ফলাফল সহ সকল ক্ষেত্রেই অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের চেয়ে এগিয়ে যেতে থাকে বিদ্যালয়টি।

যাহার রেজিস্ট্রেশন কোড নং-১২৬৫৫৯। বিদ্যালয়টিতে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৩০০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিদ্যালয়টি পাঠদানে অনুমোদন ও স্বীকৃতি পায়। এমপিওভুক্তির বিধি মোতাবেক ২০২১ সালে সকল শর্ত পূরণ করতে সক্ষম হয় তারা।

বিদ্যালয়টি অনুমোদন পেলেও এমপিওভুক্ত হননি শিক্ষকরা। এতে শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বেশি হওয়ায়২০২০-২১ অর্থবছরে বিদ্যালয়টিতে প্রায় সাড়ে ১৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে টিনশেডের ৩ কক্ষ বিশিষ্ট ঘরের বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সাংসদ ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তবে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, কাজে ধীরগতি ও কাজের মেয়াদ পার হয়ে গেলেও সম্পন্ন হয়নি নির্মাণাধীন ঘরের কাজ। কাজ করতে নানান ধরনের তাল বাহানা করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ওই বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক জিয়াউর রহমান জানান, ২০০১ সাল থেকে তিনি এ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। এমপিওভুক্ত হওয়ার আশায় ২০টি বছর এ স্কুলেই কাটিয়ে দিয়েছেন। ভবিষ্যতে এমপিওভুক্ত হবে এ আশায় মানবেতর জীবনযাপন করলেও হাসিমুখে দিন কাটাচ্ছেন। স্কুলের নতুন করে একটি ভবন হচ্ছে। তবে কাজে ধীরগতি হাওয়াই আবাসন সংকটে টিন ও বাঁশ দিয়ে তৈরি খোলা ঘরে কোনমতে নিয়মিত ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছি।

এছাড়াও বিদ্যালয়ে একটি টয়লেট, ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথক পৃথক দু’টি কমন রুম, আধুনিক শিক্ষা প্রদানের জন্য একটি ডিজিটাল ল্যাব এই প্রতিষ্ঠানের জন্য সময়ের দাবি।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, স্কুলের ভবন ও জায়গা থাকার পরও এমপিওভূক্ত হচ্ছে না। প্রতিষ্ঠান দ্রুত এমপিওভুক্ত হওয়ার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

জানতে চাইলে চারঘাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, এমপিওভুক্ত হওয়া না হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করে মন্ত্রণালয়ের ওপুর। তবে স্থানীয় সাংসদ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা মনে করলে বিভিন্ন মহলে তদবিরের মাধ্যমে এমপিওভুক্ত করতে সহায়ক হবে।

আরেকটি প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, উত্তরবঙ্গের প্রায় প্রতিটি উপজেলা বিশেষ করে চারঘাট উপজেলায় নির্ধারিত সংখ্যক জনগণের বিপরীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেশি হওয়ায় এমপিওভুক্ত না হওয়া এর মূল কারণ।

নবী আলম/বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর