পরকীয়ার কারণে স্বামীকে জবাই করলেন শিমু!

গৃহবধূ কুমকুম আক্তার শিমু (২৫)। ধারালো দা দিয়ে ঘুমন্ত স্বামী রুমান মৃধা (৩০)’র গলা কেটে লেপ দিয়ে ঢেকে রাখে পাশেই বসে ছিলেন তিনি। কিন্তু পাশের ঘর থেকে ছেলের গোঙানির শব্দ টের পেয়ে ছুটে আসেন স্বামীর মা-বাবা। তারা এসে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকতেই পালিয়ে যান শিমু। তবে পালিয়ে বেশি দূর যেতে পারেননি শিমু। পার্শ্ববর্তী মোরেলগঞ্জ উপজেলার কেয়ার বাজার বাসস্ট্যান্ডে পুলিশ ও জনতার হাতে ধরা পড়ে যান তিনি।

ভাগ্যবশত রুমানের শ্বাসনালী অক্ষত থাকায় বেঁচে যান তিনি। শনিবার রাতে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাঁধাল গ্রামের নজির মৃধার বাড়িতে নৃশংস এ ঘটনা ঘটে।

ওই রাতেই পুলিশের সহায়তায় পরিবারের লোকেরা মুমুর্ষূ অবস্থায় রুমানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় তাকে। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন।

এ ঘটনায় রুমানের মা বাদী হয়ে শনিবার দুপুরে শরণখোলা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার বাদী আহত রুমানের মা রেনু বেগম জানান, রাত আড়াইটার দিকে ঘরের মধ্যে গোঙানির শব্দ শুনতে পান তিনি। বউয়ের কাছে কীসের শব্দ জানতে চাইলে সে বলে, বিড়ালেরা ঝগড়া বাঁধিয়েছে। তখন ছেলের বাবাকে (নজির মৃধা) ঘুম থেকে উঠিয়ে রুমের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখি রুমানকে লেপ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। ঘরের মেঝে ও বিছানা রক্তে ভেজা। লেপ সরিয়ে ছেলেকে গলা কাটা অবস্থায় দেখে তারা চিৎকার, কান্নাকাটি করতে থাকেন। আশপাশের লোকজন আসার আগেই ঘাতক স্ত্রী শিমু ঘর থেকে বেরিয়ে পালিয়ে যান।

রেনু বেগম জানান, তার ছেলে একটি ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকরি করে। রুমান যশোরে কর্মরত অবস্থায় নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল এলাকার শেখ হারুন অর রশিদের মেয়ে কুমকুম আক্তার শিমুর সাথে মোবাইলে পরিচয় হয়। শিমু তখন ঝিনাইদহে একটি বায়িং হাউসে কাজ করতো। একপর্যায় তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠায় আট মাস আগে তারা নিজেরাই বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই শিমু তাদের বাড়িতেই থাকে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনোদিন ঝগড়াঝাটি হয়নি।

তিনি আরো জানান, ছেলে বাড়িতে না থাকলে বউ গোপনে মোবাইলে কথা বলতো। তাদের ধারণা, বউয়ের অন্য কারো সাথে সম্পর্ক আছে। তার ছেলেকে হত্যা করে বউ হয়তো অন্য প্রেমিকের সাথে যেতে চেয়েছিলো।

অপরদিকে, স্ত্রী কুমকুম আক্তার শিমু অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকে তার স্বামী যৌতুকের জন্য তাকে মারধর করতো। নির্যাতন সইতে না পেরে স্বামীকে গলা কেটে মেরে ফেলতে চেয়েছিলেন।

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলীপ কুমার সরকার জানান, ঘটনায় ছেলের মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার একমাত্র আসামি স্ত্রী কুমকুম আক্তার শিমুকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার কারণ উদঘাটনে চেষ্টা চলছে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর