হারিয়ে যাচ্ছে হাজার বছরের শিল্প, উত্তরণের উপায় কি?

দিনদিন পৃথিবী উন্নত হচ্ছে। বিশ্বায়ন আর শিল্পায়নের প্রভাবে মাটির টান বলতে যা, তা কেবল মাত্র বিশেষ দিবসে লোক দেখানোতেই যেন সীমাবদ্ধ। এই যেমন পহেলা বৈশাখের কথা ই ধরুন, মাটির থালায় পান্তা ভাত খাওয়ার যে রীতি তা সারা বছরব্যাপী দেখা না গেলেও বছরের ঐ একদিনই।

মৃত্তিকা শিল্পের সাথে আরো যেসব শিল্প বিদ্যমান যা প্রকৃতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ তার মাঝে অন্যতম একটি হল বাঁশ দিয়ে তৈরী নানা কৃত্রিম তৈজসপত্র।

উত্তরবঙ্গের গাইবান্ধার অদূরে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৪০ টি পরিবার এই শিল্পের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাঁশ ও বেতের তৈরী নানা পণ্য যা বংশীয় ও উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া, সেই ব্যাবসাও যেনো আর আগের স্রোতে নেই। নেই আগের মত চাহিদা ও অর্থ। একটু দুরেই মীরগঞ্জের তরুনী দাসপাড়ায় যেনো শিল্পের ভাটা পরার গল্প আছড়ে পরেছে।

প্রায় দুই দশক আগেও এই গল্পটা এমন ছিলো না। কিন্তু ঐ যে বৈশ্বিক উন্নয়নে প্লাস্টিক তথা পলিমারের আগমন ঘটেছে। সেইসাথে প্লাস্টিক পণ্য দামে অনেক কম ও টেকসই বেশি হয়ে থাকে। ব্যাবসার গ্রাফ টা এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যেখানে ৩০০ টাকার কাচামালে ১২০০ টাকার ইনকাম আজ রুপকথার গল্পে পরিনত হয়েছে। এখন ৩০০ টাকার বাঁশ দিয়ে তৈরী পণ্য হাজার টাকা পর্যন্তও পৌছায় না।

৪০ টি পরিবার যারা বাঁশের চাটাই, বিটে, পলো, কুলা, পাখা, ডালি, ভার, ঝাড়ু, ডালা, ঢাকি, চাইলোনসহ নানা পণ্য তৈরি করে হাটবাজারে বিক্রি করে। কোনো মতে চলে তাদের সংসার। বাঁশের তৈরি পণ্য ছাড়া অন্য কোনো কাজ তাদের জানা নেই। তাই পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে এটি করেন তারা। সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ কিংবা আর্থিক সহায়তা দিলে পরিবারগুলো আরও ভালো পণ্য তৈরি করে এলাকর অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভুমিকা রাখতে সক্ষম হত।

দিনশেষে দরকার সরকারি পৃষ্ঠোপোষকতা ও বেসরকারি এমনকি ব্যাক্তিপর্যায়ের উদ্যোগ। হয়ত হাজার বছর ধরে চলমান বাংলার এই শিল্প পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠতেও পারে।

বার্তাবাজার/ এম এইচ আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর