ইউপি চেয়ারম্যানের হাতে লাঞ্চনার স্বীকার সরকারি কর্মচারী!

কুড়িগ্রামে দিন-দুপুরে জনসম্মুখে সদ্য বিদায়ী ইউপি চেয়ারম্যান চর-থাপ্পড় মারলেন ইউনিয়ন পরিষদের এক কর্মরত সরকারি কর্মচারীকে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার(২৪জানুয়ারি) দুপুরে রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদে।

দায়িত্ব পালন কালে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করাকে কেন্দ্র করে সাবেক চেয়ারম্যান শ্রী রবীন্দ্রনাথ কর্মকারের হাতে হিসাব সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর আরিফুল ইসলাম লাঞ্চিত হন। এসময় ঘটনাস্থলে গ্রাম পুলিশ ও ইউপি সদস্যদের সামনে কিল-ঘুষি এবং চর-থাপ্পড় মারেন চেয়ারম্যান শ্রী রবীন্দ্রনাথ কর্মকার।

বিষয়টি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক জনতা ভীড় জমায় পরিষদ প্রাঙ্গণে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কৌশলে সেখান থেকে সটকে পড়েন চেয়ারম্যান।

ভুক্তভোগী অভিযোকারী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো সোমবার যথা সময়ে তিনি অফিসে আসেন। দুপুর আনুমানিক ৩টার পরে আমার কাছে একজন ইউনিয়নের নাগরিক জন্মদিন নিবন্ধন আবেদনের কাগজপত্র নিয়ে আসেন। আবেদনের ত্রুটি থাকায় সেটি সমাধানের জন্য পরামর্শ দেই। কিন্তু সেই আবেদনকারী ব্যক্তি চেয়ারম্যানের কাছে চলে যান। পরে চেয়ারম্যান আমাকে ডেকে পাঠালে আমি হাতের কাগজপত্রাদি রেখে কক্ষ থেকে বের হবার মুহুর্তে চেয়ারম্যান আমার কক্ষে প্রবেশ করেন। তিনি আমার দিকে আবেদনের কপিটি ছুঁড়ে দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আমার গলা চেপে ধরে মারধর ও লাঞ্চিত করেন। এসময় ইউপি সচিবসহ গ্রাম পুলিশ এবং সাধারণ সেবা গ্রহিতারাও উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, আমার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে মঙ্গলবার(২৫ জানুয়ারি) উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছি। আমার প্রতি যে অন্যায় হয়েছে আমি তার ন্যায় বিচার চাই।’

এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী গ্রাম পুলিশ জামাল উদ্দিন বলেন, ‘হঠাৎ চেয়ারম্যান স্যার আরিফুলের রুমে গিয়ে একটি আবেদন চটকায় দেয়। এরপর কিছু না শুনেই তার গায়ে হাত তোলেন।’

ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড সদস্য সাদেকুল ইসলাম সাদেক আরিফুলকে থাপ্পড় মারার বিষয়টি তিনিও স্বীকার করেন। অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শ্রী রবীন্দ্রনাথ কর্মকারের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ইউপি হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি কুমার বিশ্বজিৎ বর্মন বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পরে আমরা উপস্থিত হয়ে তাৎক্ষনিকভাবে সমাধানের চেষ্ঠা করেছি। কিন্তু চেয়ারম্যান মহোদয় তার দাম্ভিকতা এবং প্রভাব দেখিয়ে এড়িয়ে যান। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে এই ঘটনার সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার কামনা করছি।’

এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরে তাসনীম সরকারি কর্মচারী লাঞ্চনার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘এই বিষয়ে একটি শুনানী হবে। এরপর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য,ইউপি চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ কর্মকার গত ২৬শে ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত হন।’

সুজন মোহন্ত/বার্তাবাজার/এ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর