আনোয়ারায় অনাবাদি জমিতেই চলছে তরমুজ চাষ

‘তরমুজ চাষে ব্যস্ত কৃষকরা’ কৃষক পরিবার ‘ঘরে বসে নেই’ বছরের কিছু সময় এসব অনাবাদী জমিকে মহিষের চারণ ভূমি হিসেবে ব্যবহার করা হলেও বেশিরভাগ সময়ই খালি থাকতো। এখন ওইসব অনাবাদি জমিতেই চলছে তরমুজ চাষ। কম সময়ে বেশি লাভবান হওয়ায় আনোয়ারা উপজেলার উপকূলীয় এলাকায় তরমুজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের।

গত মৌসুমে উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ হেক্টরে। কম সময়ে বেশি লাভ পাওয়ায় এবার উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের পারকি ফুলতলী ও শঙ্খ নদীর মোহনায় বেশি জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে।

সোমবার সকালে সরজমিনে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের পারকি সৈকতের ফুলতলী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চাষীরা ক্ষেতে সেচ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত, কিছু কিছু ক্ষেতে তরমুজ পাকা শুরু করেছে। তবে অসময়ে বৃষ্টির কারণে কিছু কিছু গাছ ফুল ও ফলসহ মারা গেছে। অধিকাংশ গাছে ফুল ও ফলে ভরে গেছে। এখানকার উৎপাদিত তরমুজের ফলন সাইজে যেমন বড় তেমনি মিষ্টিও। তাই এলাকায় এ তরমুজের চাহিদাও দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে। চাষিরা জানায় পানি ও বীজ সমস্যা দূরী করণে সরকারি পৃষ্টপোষকতা ফেলে এ এলাকার উৎপাদিত তরমুজ দেশে চাহিদা মিটাতে যেমন বড় ভূমিকা রাখবে তেমনি কৃষকেরাও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।

রায়পুর ইউনিয়নে ফুলতলী এলাকার তরমুজ চাষ করেছেন এয়ার মোহাম্মদ। তিনি জানান, তরমুজ চাষে ক্ষতির সম্ভাবনা তেমন নেই। সময় কম লাগে। লাভও ভালো। তাই তিনি এবার তার সবগুলো জমিতেই তরমুজ চাষ করেছেন। সরকারি পৃৃষ্ঠপোষকতা পেলে আনোয়ারায় তরমুজ চাষে বিপ্লব হতে পারে বলে মনে করেন এ কৃষক।

তিনি জানান, চাষাবাদ শুরু থেকে তরমুজ তোলা পর্যন্ত ১ থেকে ২ মাসের মধ্যে বাজারে তরমুজের বিক্রয় করা সম্ভব হবে। প্রথমদিকে চারা লাগানোর পর বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে। এবছর আড়াই কানি জমিতে তরমুজ চাষ করেছি, খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা, ফলনও ভাল হয়েছে, আবহাওয়া ঠিক থাকলে ২ থেকে ৩ লাখ টাকার তরমুজ পাওয়া যাবে।

নবনির্বাচিত রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিন শরীফ বলেন, রায়পুর ইউনিয়নের পারকি ফুলতলী ও দক্ষিণ গহিরা শঙ্খ নদীর মোহনায় উৎপাদিত তরমুজ মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় চট্টগ্রামের মানুষের মাঝে বেশ কদর বেড়েছে। সরকারি সহযোগীতা ফেলে এ অঞ্চলের চাষিরা দেশের বাজারের চাহিদা মিটাতে সক্ষম হবে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা ছরোয়ার আলম বলেন,উপজেলার রায়পুর, হাইলধর, বারখাইন, চাতরী, জুইদন্ডী ও পরৈকোড়া ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ২২ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করা হয়েছে। যা গত বছর ১৪ হেক্টর ছিল। দিনদিন উপজেলায় তরমুজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মধ্যে।

তিনি আরো বলেন, এখানকার উৎপাদিত তরমুজ সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এ তরমুজের চাহিদাও বেশি। উপজেলা কৃষি অফিস তরমুজ চাষিদের বিভিন্নভাবে উৎসাহ ও সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

সুমন/বার্তাবাজার/এ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর