ভাড়া ঘরে সাব-রেজিস্টার অফিস, কোটি টাকার রাজস্ব আদায়

নিজস্ব ঘর নেই আশাশুনির সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের। ভাড়া ঘরে কেটে যাচ্ছে বছরের পর বছর। এতে ভাড়াটিয়া ভবনের কারণে জনগণ ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র অনেকটাই অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। দ্রুত স্থায়ী ভবন নির্মাণে বিকল্প নেই বলে দাবী সাব-রেজিস্টার অফিসের কর্মকর্তাদের।

দেশের প্রতিটি উপজেলার ন্যায় সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার সাব-রেজিস্টার অফিস সরকারি রাজস্ব আয়ের অন্যতম একটা খাত। পাকিস্তান আমলের গোড়াপত্তনের কিছুকাল পরেই গড়ে ওঠা এই সাব-রেজিস্টার অফিসটির নেই কোন নিজস্ব ভবন। বিভিন্ন সময় উপজেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে ভাড়া নিয়ে চলতে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর একসময় উপজেলা পরিষদের পুরাতন কমপ্লেক্স ভবনের দুটি ছোট রুমে ঠাই মেলে সাব-রেজিস্টি অফিসের। কিন্তু ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি বেশি দিন, প্রায় অর্ধ যুগ আগে উপজেলা পরিষদের সে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলে উপজেলার মানিকখালী খেয়াঘাট রোডের পাশে একটা ভাড়া বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে ঠাই মেলে আশাশুনি সাব রেজিস্টার অফিসের।

সরেজমিনে দেখা যায়, একটি হল রুম আর ছোট ছোট কয়েকটি রুম নিয়ে জোড়াতালি দিয়ে চলছে অফিসের কার্যক্রম। দলিলের মূল্যবান কাগজ পত্র সংরক্ষণের জন্য বরাদ্দকৃত ঘরটি ছোট হওয়ায় বালাম বই গুলো অনেক সময় রাখতে হয় বিভিন্ন আলমারি বা চেয়ারের উপর কখনো আবার মেঝেতে।
অন্যদিকে রাস্তায় পাশে নির্মিত ভাড়া বাড়িতে নেই কোন বাড়তি শেড বা ছাউনি। দুর দুরান্ত থেকে দলিল রেজিস্টি করতে আসার জনসাধারণকে পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনায়। কখনো রোদ আবার কখনো বৃষ্টির কবলে পড়তে হয় তাদের অথচ এই জনগণের কাছ থেকে আসে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। আশাশুনি সাব-রেজিস্টার অফিসের হিসাব মতে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এই অফিস থেকে সরকারি কোষাগারে রাজস্ব আয় হয়েছে ৫ কোটি ৮ লাখ ৯১ হাজার ১শত ৮৫ টাকা ৫০ পয়সা।

অপর দিকে সন্ধ্যা হতেই সাব-রেজিস্টার অফিসের এই রাস্তাটিতে নেমে আসে ভুতুড়ে অন্ধকার। সচারাচর লোকজন চলাচল থাকে না বললেই চলে। সব মিলিয়ে গাছমছমে পরিবেশে একজন নৈশ্য প্রহরী একার কাছে অনেকটাই অরক্ষিত অবস্থায় থাকে আশাশুনি সাব-রেজিস্টার অফিস। যেখানে কত টুকু সংরক্ষিত থাকবে এই উপজেলাবাসীর মূল্যবান সব দলিল পত্র এমন প্রশ্ন রেখে দ্রæত আশাশুনিতে সাব-রেজিস্টার অফিসের জন্য একটি স্থায়ী বহুতল ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এবিষয়ে সাব রেজিস্টার অফিসের প্রধান সহকারী প্রভাষ কুমার মন্ডল বলেন, আমাদের একটা নিরাপদ রেজিস্ট্রি অফিস খুবই প্রয়োজন। সুরক্ষিত ভবন না থাকায় সরকার ও জনগনের ডকুমেন্টস গুলো অনেকটাই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

অপরদিকে ভাড়াটিয়া ভবন আর অরক্ষিত ডকুমেন্টস নিয়ে শংঙ্কা প্রকাশ করে আশাশুনি রেজিস্ট্রী অফিসে দায়িত্বরত সাব-রেজিস্টার কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, আমি বহু অফিসে দায়িত্ব পালন করেছি কিন্তু এমন অফিস আমার নজরে এটাই প্রথম। আমি যোগদান করার একমাসের মধ্যে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে স্থায়ী ভবন নির্মাণের আবেদন জানিয়ে পত্র প্রেরণ করেছি। রাজস্ব আয়ের খাত ও সরকারি কাগজপত্র নিরাপদ রাখতে এখানে একটা ভবন দ্রুত বরাদ্দ করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

খায়রুল/বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর