সড়ক নির্মাণে পদে পদে অনিয়ম!

পটুয়াখালীর বাউফলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ২.২২ কিলোমিটার কার্পেটিং সড়ক নির্মাণ কাজে পদে পদে লাগামহীন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে সড়ক নির্মাণ করায় সড়কের স্থায়ীত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অন্য দিকে লোপাট হয়ে যাচ্ছে সরকারের বরাদ্ধের বড় একটা অংশ।

এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের বীরপাশা বাজার হইতে কুয়েত মজিদ পর্যন্ত ২.২২ কিলোমিটার কার্পেটিং সড়ক নির্মাণের কার্যাদেশ পায় পটুয়াখালীর মের্সাস মহিউদ্দিন আজাদ জেবি নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ৪৫লাখ টাকা। নির্ধারিত সময় কাজ শেষ না হওয়ায় দুই দফায় প্রকল্পের সময় বাড়ানো হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে। প্রতিবর্গ মিটারে ১.২৫ লিটার বিটুমিন ও কেরসিনের মিশ্রণ (প্রাইম কোট) দেওয়ার কথা থাকলেও নামমাত্র প্রলোপ দিয়ে কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে। কার্পেটিং ঢালাই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্ন মানের পাথর ও বিটুমিন। বিটুমিনের পরিমানও কম। কার্পেটিং শেষে যত্রতত্র ভাবে সিলকোট করা হচ্ছে। এতে একদিন না যেতেই বিভিন্ন স্থানের সিলকোট উঠে যাচ্ছে।

এছাড়াও স্থানীয়দের তথ্য মতে, ‘সড়ক নির্মাণ কাজে নির্ধারিত বালুর পরিবর্তে পুকুর-ডোবা থেকে অবৈধ বোমা ড্রেজার দিয়ে বালু-কাঁদা দিয়ে রাস্তা ভরাট করা হচ্ছে। এজিন, সাববেস ও ম্যাকাডামে ব্যবহার করা হয়েছে নির্মাণের ইট ও খোয়া।

স্থানীয় বাসিন্দা আ. গণি, আনিসুর রহমানসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, ‘নির্মাণ কাজের শুরুতে অনিয়মের বিষয় ঠিকাদারের প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানোর পরেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো প্রভাবশালী ঠিকাদার আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। এছাড়াও সড়কের মাঝে কালভার্ট নির্মাণ না করায় কৃষি জমি অকাজো হয়ে পড়েছে।

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, প্রভাবশালী ওই ঠিকাদার বাউফল এলজিইডির প্রকৌশলী ও সড়ক নির্মাণ কাজের তদারকি কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে এমন অনিয়ম- দুর্নীতি করছেন। স্থানীয়রা একাধিকার অভিযোগ করলেও বিষয়টি আমলে নেয়নি সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

এবিষয়ে নির্মাণ কাজ তদারকি কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম ও ঠিকাদারের প্রতিনিধি মো. এনামুল ইসলাম একই সুরে বলেন, ‘শিডিউল অনুযায়ী নির্মাণ কাজ চলছে। কোন অনিয়ম দুর্নীতি হয়নি।

বিষয়টি পটুয়াখালী জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জিম. এম সাহাবুদ্দিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন,‘ অনিয়ম হলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে।’

হান্নান/বার্তাবাজার/এ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর