১১ বছর পর জুঁইদন্ডিতে নির্বাচন, প্রচারনায় উৎসবের আমেজ,লড়াই হবে দ্বি-মুখী

ইউনিয়নের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলার কারণে ২০১১ সালের ১৪ জুলাইয়ে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার পর দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর পর আনোয়ারা উপজেলার জুঁইদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ষষ্ট ধাপে আগামী ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। ইউনিয়ন জুড়ে চলছে প্রচার-প্রচারণার উৎসবের আমেজ। প্রথমবারের মতো আনোয়ারার এই ইউনিয়নে ইভিএমে ভোট গ্রহণের হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। ইউনিয়নের হাটে-বাজার, চায়ের দোকানে চলছে নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্যরাও রাত-দিন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোট প্রার্থনা করছেন। প্রতিটি গ্রামের অলিগলি ব্যানার, পোস্টার ও লিফলেটে ছেয়ে গেছে। সবমিলিয়ে ১১ বছর পর জমে উঠেছে এ ইউনিয়নের নির্বাচন।

সূত্রে জানাযায় , নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১০ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৪৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তবে বিএনপি থেকে কোনো প্রার্থী না থাকলেও জুঁইদন্ডি ইউপিতে মূল লড়াই হবে দ্বি-মুখী। আ. লীগ মনোনিত প্রার্থী মো. ইদ্রীস (নৌকা প্রতীকে) ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী (অটোরিকশা প্রতীক)। এছাড়াও মাঠে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেন (আনারস মার্কা), রেহেনা আকতার (ঘোড়া মার্কা)।
ভোটের মাঠে লড়াইয়ে এগিয়ে আ. লীগ মনোনিত প্রার্থী মো. ইদ্রীস ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী। নৌকার প্রার্থী ইদ্রীচ গ্রামে গ্রামে নির্বাচনী সভা করে সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরছেন ভোটারদের কাছে। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম দাবি করছেন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে জনগণ তাঁকে নির্বাচিত করবে।

নতুন ভোটার নেজাম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন নির্বাচন বঞ্চিত ছিল এই ইউনিয়নের মানুষ। অনেক বছর পর নির্বাচন পেয়ে খুশি আমরা। জীবণের প্রথম ভোট ইবিএমে দেব,তাই আনন্দ অন্যরকম। তবে যার মাধ্যমে এলাকার উন্নয়ন হবে এ রকম ব্যক্তি যেন নির্বাচিত হয় এই প্রত্যাশা করছি।

স্বতন্ত্র প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এই ইউনিয়নের মানুষ শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারলে ইনশাল্লাহ আমি জয়লাভ করব। তিনি আরো বলেন প্রতীক পাওয়ার পর থেকে আমি সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছি। কিছু কিছু এলাকায় আমার প্রচারণায় বাঁধা দিচ্ছে। প্রশাসনের কাছে সুষ্ট নির্বাচনের দাবী করছি।

আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী মো. ইদ্রীচ বলেন, সরকারের উন্নয়নে শরিক হতে জনগণ নৌকায় ভোটদেবে বলে আমি বিশ্বাস করি। দীর্ঘ দিন ধরে নির্বাচন না হওয়ায় জুঁইদন্ডী ইউনিয়ন উন্নয়ন বঞ্চিত ছিল। আমি নির্বাচিত হলে মাননীয় ভূমিমন্ত্রীর সহযোগীতায় উন্নয়ন বঞ্চিত এই ইউনিয়নকে উপজেলায় একটি মডেল ইউনিয়নে রুপান্তর করব। তিনি আরো বলেন, প্রতিপক্ষ বিএনপি-জামাতের সহযোগীতায় আমার লোকজনকে হুমকি দিচ্ছে এবং কয়েকটি ভোট কেন্দ্র দখল করার পায়তারা করছে।

উপজেলা রিটারিং কর্মকর্তা আবদুল শুক্কুর বলেন, এই ইউনিয়নটি উপজেলার উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত। আমি ইউনিয়নের সব কয়টি কেন্দ্র ঘুরে দেখেছি। প্রথমবারের মতো এই ইউনিয়নে ইভিএমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন সুষ্ঠের লক্ষ্যে সব ধরণের প্রস্ততি গ্রহণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্যযে,বর্তমান চেয়ারম্যান মোরশেদুর রহমান,স্থানীয় বাসিন্দা কফিল উদ্দীন ও আয়ুব আলী নামে দুই ব্যাক্তি যৌথভাবে উচ্চ আদালতে জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের সীমানা নির্ধারণী মামলা করেন। ফলে আদালতে মামলা নিস্পত্তি না হওয়ায় এ ইউনিয়নে গত প্রায় ১১ বছর ধরে নির্বাচন স্থগিত ছিল।

সুমন শাহ/বার্তাবাজার/এম.এম

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর