ভিজিডি’র চাল কালো বাজারে বিক্রি, সরকারী খাদ্য গোডাউন সিলগালা !

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে খাদ্য গোডাউনের অসাধু কর্মকর্তা মোর্শেদ আলম স্থানীয় একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ভিজিডিসহ বিভিন্ন কর্মসূচীর ভালো চাল কালো বাজারে বিক্রি করে পঁচা চাল সংগ্রহ করার অভিযোগে উপজেলা সরকারি খাদ্য গোডাউন সিলগালা করেছেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল ইমরান।

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) রাত ১০ টার দিকে রৌমারী খাদ্য গোডাউনে অভিযান চালিয়ে খাওয়ার অনুপযোগী ১৯ মেট্রিকটন চালসহ ০১ নম্বর গুদাম সিলগালা করা হয় । বুধবার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল ইমরান।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভিজিডিসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামের ৩’শ মে. টন চাল কুড়িগ্রাম খাদ্য গুদাম থেকে রৌমারী গোডাউনে ঢোকার কথা। সেই মোতাবেক ১৫৪ মে. টন চাল কুড়িগ্রাম খাদ্য গুদাম থেকে পাঠানো হয়।

অজ্ঞাত কারণে সেই ভালো চাল না ঢুকিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পঁচা চাল সংগ্রহ করে গোডাউনে ঢুকানো হচ্ছিল। অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আল ইমরান সেই সত্যতা পান।

রৌমারী খাদ্য গোডাউনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোর্শেদ আলম বলেন, কুড়িগ্রাম খাদ্য গুদাম থেকে ১৫৪ মে. টন চাল পাঠিয়েছে। ১’শ মে. টন এখনো নৌকায় আছে। ৫৪ মে. টন ট্রাক্টরে আসতে দেরি হওয়ার কারণে রাতে চাল ঢোকানো হচ্ছিল। এসময় তিনি কুড়িগ্রাম খাদ্য গুদামের ৫৪ মে. টনের চালান পত্র দেখান।

এব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল ইমরান বলেন, রৌমারী খাদ্য গোডাউনে পঁচা চাল ঢোকানো হচ্ছে এমন সংবাদের ভিক্তিতে গোডাউনে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় গোডাউনে ঢোকানো অবস্থায় ট্রাক্টরে ৭৭ বস্তা ও গোডাউনের ভিতরের ১৯ মেট্রিকটন পঁচা চালসহ ০১ নম্বর গুদাম সিলগালা করা হয়।

তিনি আরও বলেন,”জেলা খাদ্য কর্মকর্তার সাথে আমার কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন রৌমারী উপজেলার জন্য ভিজিডিসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামের জন্য ৩’শ মে.টন চাল কুড়িগ্রাম খাদ্য গুদাম থেকে রৌমারী খাদ্য গোডাউনে যাবে। ইতোমধ্যে ১৫৪ মে.টন চাল কুড়িগ্রাম খাদ্য গুদাম থেকে ছাড় করা হয়েছে। ৫৪ মে.টন রৌমারী খাদ্য গোডাউনে চলে গেছে। ১’শ মে.টন চাল নৌকায় করে যাচ্ছে । পঁচা চালের বিষয়ে তিনি বলেন,” কুড়িগ্রাম থেকে পাঠানো চালের নমুনাসহ তদন্ত পাঠাচ্ছি সেটা দেখার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বুধবার দুপুরের দিকে কুড়িগ্রাম থেকে চালের নমুনাসহ কুড়িগ্রাম খাদ্য পরিদর্শক পারভেজ হোসেন, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক নাজমুল হক ও রৌমারী উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলাউদ্দিন বসুনিয়াসহ ৩ সদস্যের একটি তদন্ত টীম এসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ তদন্ত করে নমুনা চালের সাথে সীলগালা চালের কোন মিল খুজে পাননি বলে জানিয়েছেন তদন্ত টীম।

কুড়িগ্রাম খাদ্য পরিদর্শক পারভেজ হোসেন বলেন, “নমুনা চালের সাথে সীলগালা করা পঁচা চালের কোন মিল নেই। এখন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবো। যিনি এর সাথে যুক্ত রয়েছেন তার বিষয়ে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন।”

সুজন/বার্তাবাজার/এ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর