শিমুর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাইলেন পিতা!

ঢাকায় খুন হওয়া আমতলীর মেয়ে আলোচিত চিত্র নায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর পিতা সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ নুরুল ইসলাম রাঢ়ী মুঠোফোনে বিলাপ করছিলেন আর বলছিলেন আমার আদরের মেয়ে শিমুকে যারা হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই আমি । শিমু হত্যার খবর আমতলীতে ছড়িয়ে পড়লে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকাবাসী শিমুর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ও ফাঁসির দাবি করেন।

ঢাকাই ছবির নায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর গ্রামের বাড়ী বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামে। তার নানা বাড়ী একই উপজেলার আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের তারিকাটা গ্রামে। ১৯৯৫ সালে শিমুর পিতা মোঃ নুরুল ইসলাম রাঢ়ী গ্রামের বাড়ী ছেড়ে স্ত্রী দুই পুত্র হারুন অর রশিদ ও সাইদুল ইসলাম খোকন এবং দুই কণ্যা রাইমা ইসলাম শিমু ও ফাতেমাকে নিয়ে আমতলী পৌর শহরের ফেরিঘাটের সবুজবাগ এলাকায় বসবাস করতেন। শিমু তখন আমতলী এমইউ বালিকা বিদ্যালয়ে ছাত্রী। ছোট বেলা থেকেই শিমু সাংস্কৃতিক মনা ছিলো। অভিনয়, নাচ ও গানের প্রতি ছিলো তার অনেক জোগ। আমতলীর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিমুর অভিনয়, নাচ ও গানের প্রসংশা ছিল তখন মানুষের মুখে মুখে।

পারিবারিক কারনে ১৯৯৬ সালে শিমুর মা রাশেদা বেগম তার সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় চলে যান। সেখানে বসবাসের সময় পরিচয় হয় চিত্র পরিচালক কাজী হায়াৎ এর সাথে। তার হাত ধরেই ১৯৯৮ সালে চিত্র জগতে প্রবেশের পর রূপালী পর্দার বদৌলতে শিমুর নাম হয়ে যায় রাইমা ইসলাম শিমু। একের পর এক বিভিন্ন সিনেমায় অভিনয়ের পর শিমুর নাম ছড়িয়ে পড়ে আমতলীসহ সারাদেশে।

অপরদিকে শিমুর মা এবং তাদের সন্তানরা ঢাকা চলে গেলেও পারিবারিক কারনে শিমুর বাবা মোঃ নুরুল ইসলাম রাঢ়ী নিজ গ্রাম আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামের বাড়ীতে থেকে যান। পরবর্তীতে তিনি ওই বাড়ি ছেড়ে তিনি একই ইউনিয়নের হলদিয়া গ্রামে বসবাস করা শুরু করেন। ওই গ্রাম থেকেই তিনি একবার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

গত সোমবার রাত ১০টায় ছেলেদের ফোন এবং টেলিভিশনের খবরের মাধ্যমে জানতে পারেন তার মেয়ে শিমুর খুনের ঘটনা। ওই রাতেই তিনি আমতলী থেকে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে কোন যানবাহন না পেয়ে পরের দিন মঙ্গলবার খুব সকালে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বর্তমানে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন।

আজ (বুধবার) তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে কথা হলো বার্তা বাজারের সাথে। তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে জানিয়ে হাউমাউ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এরপর তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার মাইয়াডারে অনেক আদর স্নেহ দিয়ে বড় করেছি। হেই মাইয়াডারে ওরা মাইরা ফালাইছে। আমি আর কিছু চাই না শুধু আমার মাইয়াডারে যারা হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই।

এদিকে আলোচিত চিত্র নায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর মরদেহ উদ্ধার করে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই আমতলীর শহরের অলিগলি ও গ্রাম- গঞ্জের হাট- বাজারে চলছে শোক আর আফসোস। স্থানীয় মুদি দোকান থেকে শুরু করে পান দোকন পর্যন্ত সবারই একটাই প্রশ্ন কি এমন ঘটনা ঘটলো যে আমতলীর কৃতি সন্তান শিমুকে নারকীয়ভাবে খুন করে মরদেহ টুকরো করে তা বস্তায় ভরে রাস্তার পাশে ফেলতে হবে। তারা শিমু হত্যায় যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ও ফাঁসির দাবি করেন।

উল্লেখ্য, পারিবারিক কলহের কারনে চিত্র নায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর স্বামী নোবেল তাকে হত্যা করেছে বলে পুলিশের কাছে দায় শিকার করেছেন বলে প্রেস বিফিং করে জানিয়েছে পুলিশ ।

মেহেদী/বার্তাবাজার/এ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর