সেই পিআইও’র মানহানির মামলায় গাইবান্ধার ৫ সাংবাদিকের জামিন

ঘুষ-দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সাবেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) নুরুন্নবী সরকারের দায়ের করা মানহানির দুই মামলায় যমুনা টেলিভিশন ও কালের কণ্ঠের সাংবাদিকসহ পাঁচজনকে জামিন দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে রংপুর চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (আমলী) আদালতের বিচারক এফ, এম আহসানুল হক তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।

তাঁরা হলেন, যমুনা টিভির গাইবান্ধা প্রতিনিধি জিল্লুর রহমান পলাশ, কালের কণ্ঠের সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি শেখ মামুন-উর-রশীদ, স্থানীয় সাংবাদিক আবু জায়েদ কারী (চাঁদনী বাজার), একেএম সামছুল হক (ভোরের দর্পণ) ও মানবাধিকারকর্মী মাহাবুর রহমান।

সাংবাদিকদের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. ফরহাদ হোসেন লিটু। বাদি পক্ষের আইনজীবি ছিলেন মো. শফিকুল ইসলাম। এসময় বাদি নুরুন্নবী সরকার আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে অ্যাডভোকেট ফরহাদ হোসেন বার্তা বাজারকে জানান, মানহানির দুই মামলায় বিবাদীদের প্রতি সমন জারি করেন আদালত। কিন্তু দীর্ঘদিনেও অনেকের কাছে সেই সমন পৌঁছায়নি। বিবাদীরা পেশায় সাংবাদিক, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ায় আদালতে হাজির হয়ে তারা জামিনের আবেদন করেন। পরে আদালত তা মঞ্জুর করেন।

এর আগে, ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোতোয়ালী আমলী আদালতে মানহানির পৃথক দুটি মামলা করেন পিআইও নুরুন্নবী সরকার। ২০১৫ সালে যোগদানের পর সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় টানা ৫ বছরের চাকরিতে দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করেন তিনি। ঘুষ-দুর্নীতির দায়ে তার বিরুদ্ধে দুদুকসহ পাঁচটি মামলা হয় সুন্দরগঞ্জ থানায়। নুরুন্নবী সরকারের ঘুষ বাণিজ্য ও দুর্নীতি কর্মকাণ্ড নিয়ে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একাধিক সচিত্র প্রতিবেদন প্রচার হয় যমুনা টেলিভিশন ও কালের কণ্ঠসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে।

মুলত নিজের দুর্নীতি আড়াল করতেই নুরুন্নবী সরকার মিথ্যা মানহানির মামলা করেন। মামলায় বিবাদী করা হয় যমুনা টিভি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক, বার্তা সম্পাদকসহ গাইবান্ধা জেলা-উপজেলা পর্যায়ের ১২ সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীকে। আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করে ৭ জনকে অব্যহতি ও ৫ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন জমা দেয় পিবিআই। পরে আদালত ৫ সাংবাদিকের নামে সমন জারি করেন।

এদিকে, আর্থিকখাতে দুর্নীতি, কমিশন বাণিজ্যে সিন্ডিকেট ও অসদচারণের দায়ে নুরুন্নবী সরকারের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী ও ১৮ অক্টোবর দুটি বিভাগীয় মামলা করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। একই সঙ্গে তাকে লঘুদণ্ড হিসেবে দুইটি বার্ষিক বর্ধিত বেতন দুই বছরের জন্য স্থগিত ও স্থায়ীভাবে বেতন গ্রেড নিম্নতর (ডিমোশন) পদাবনতি দেয়া হয়। এছাড়া রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি থেকে বান্দরবান সদর উপজেলায় যোগদান না করে কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য ও অসদাচরণের দায়ে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

রকি/বার্তাবাজার/এ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর