অপেক্ষায় কেটেছে ৫০ বছর কেউ কথা রাখেনি

অপেক্ষায় কেটেছে ৫০ বছর, কেউ কথা রাখেনি। আত্রাই নদে সেতু হয়নি। সেতু না হওয়ার কষ্টে রয়েছেন ১০ গ্রামের মানুষ। দুর্ভোগ সয়ে এলাকাবাসী বর্ষায় নৌকা আর শুস্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে এই নদী পারাপার হচ্ছেন। সেতু না হওয়ার কারণে এলাকার রাস্তাসহ অন্য কোনো উন্নয়নও তেমন হয়নি।

এভাবেই আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন ৭৩ বছরের এক বৃদ্ধ আবদুল হান্নান। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের বিলহরিবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা তিনি। আত্রাই নদীর তীর ঘেঁষেই তার বাড়ি। তার মতো হাজারো মানুষের দাবি বিলহরিবাড়ী-সাবগাড়ী বাজার এলাকায় আত্রাই নদীতে একটি পাকা সেতু নির্মাণ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আত্রাই নদীতে খেয়া নৌকার পরিবর্তে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। উঁচু-নিচু হওয়ায় বয়স্ক মানুষ, স্কুল-কলেজ গামী শিক্ষার্থী ও রোগীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। নিরুপায় হয়ে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হচ্ছেন এই নদী। নদীর পূর্ব পাশের হরদমা, কারিগরপাড়া ও বিলহরিবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রাজ্জাক, সানোয়ার হোসেন, আশরাফুল ইসলামসহ অন্তত ১০ জন বলেন, আত্রাই নদীতে সেতু না থাকায় তাদের গ্রামে পাকা সড়ক হয়নি। নদীটি খরস্রোতা হওয়ায় খেয়া নৌকায় পারাপার হতে সময় লাগে প্রায় ২০ মিনিট। ছেলেমেয়েদের স্কুুল-কলেজে যাতায়াত, ফসল পরিবহনসহ উপজেলা সদরে যেতে হয় আত্রাই নদী পার হয়ে। ভরা বর্ষায় খেয়া নৌকাডুবি এবং শুকনোয় বাঁশের সাঁকো পার হতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

সাবগাড়ী বাজারের বাসিন্দা সাবেক অধ্যক্ষ ওমর আলী বলেন, চলনবিল অধ্যুষিত এলাকাটি কৃষি প্রধান। সাবগাড়ী বাজার সংলগ্ন ঘাট হয়েই নদীর উত্তর পাশের গুরুদাসপুর উপজেলার বিলহরিবাড়ী, কারিগরপাড়া, হরদমা এবং সিংড়ার কৃষ্ণনগর, কাউয়াটিকিরি,
পানলি ও ডাহিয়া গ্রামের মানুষ, তাদের খেতের ফসল পারাপার এবং জেলা-উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করে থাকেন। তা ছাড়া পশ্চিম পাশের সাবগাড়ী, রাবার ড্যাম, যোগেন্দ্রনগর ও ভিটাপাড়া গ্রামের মানুষ ওই গ্রামগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ এবং চলনবিলের ফসল নিয়ে আসে। সেতু না থাকায় মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

খেয়া নৌকার মাঝি সাদেক আলী বলেন, প্রায় ২৮ বছর যাবৎ নৌকা দিয়ে মানুষ পারাপার করছি। এ জন্য বছরে সবার কাছ থেকে নির্দিষ্ট টাকা এবং ধান নিয়ে থাকি। বর্ষা মৌসুমে খেয়া থাকলেও শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো তৈরি করি। তবে এখানে একটি সেতু হলে আমাদের কষ্ট অনেক লাঘব হবে এবং মানুষ উন্নত জীবনযাপন করতে পারবেন।

স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস বলেন, অতি দ্রুত এই সেতুটি হয়ে যাবে।

মেহেদী হাসান তানিম/বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর