দুবছরেও সংস্কার হয়নি সাতক্ষীরার প্রতাপনগরের ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ

বার বার ভেঙে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হওয়ার পরেও ২ বছরে সাতক্ষীরার প্রতাবনগরের বেড়িবাঁধ নির্মান কাজ শেষ হয়নি। এতে পুনরায় ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে এ এলাকায়। ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতে একই পরিস্থিতে পড়ায় ঐ এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থা একে বারে ভেঙে পড়তে বসেছে।

সেই সাথে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাবনগরে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাধ সংস্কারে ধীরগতির অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকারদারের বিরুদ্ধে। চলমান এ কাজে অভিযোগের বিষয়ে ঘটনাস্থ পরিদর্শন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন। গত সোমবার পরিদর্শন করে সঠিক নিয়মে দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন তিনি।

এদিকে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ২০২০ সালের ২০ মে ঘুর্নিঝড় আম্ফান ও ২১ সালের ২৬ মে ঘুর্নিঝড় ইয়ার্স পরবর্তী হরিশখালির ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধটি নির্মাণ সংস্কার কাজ দু’বছর ধরেও সম্পন্ন হয়নি। এতে ২০২০ সালের ২০ মে আম্পান ঝড়ে প্রতাপনগর ইউনিয়নর মাইলের পর মাইল বেড়িবাঁধ ভেঙে ২২ গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে কোটি কোটি টাকার মৎস্যঘের, ফসলের ক্ষেত, বসতবাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ডুবে গিয়ে অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা ভেঙে পড়ে। কিছুদিন পরে রিং বাঁধ দিয়ে কয়েকটি গ্রামে জোয়ার ভাটা সাময়িক ভাবে আটকানো হয়। কিন্তু ঠিক পরের বছর ২০২১ সালের ২৬ মে ইয়াস ঝড়ে প্রায় সব রিং বাঁধ ভেঙে ফের তলিয়ে যায় গোটা এলাকা।

পরবর্তীতে শীতের আগে নদীর রাতে কম হলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন ও নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব দাউদ আলী গাজীর নেতৃত্বে শতশত মানুষ রিং বাঁধ দিয়ে এলাকায় জোয়ার ভাটা বন্ধ করে। এরপর থেকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মুল বাঁধ বাঁধের কাজ শুরু করেন।

স্থানীয়রা জানান, তারা আর খোলপেটুয়া ও কপোতাক্ষ নদীর জলে ফের ডুবতে চাই না। প্রতাপনগরের কোলা গ্রাম ও হরিশ খালির দক্ষিণ পশ্চিম অংশের প্রায় ১১ কি. মি. সংস্কারাধীন বেড়েবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। কোন কোন স্থানে এক ফুট, কোন স্থানে দুই ফুট সরু বেড়িবাঁধ অবশিষ্ট রয়েছে। যা যেকোন সময় ভেঙে আবারো প্লাবিত হওয়ার আশংঙ্কা বিরাজ করছে।

তবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিনিধি সৈয়দ আছাদুজ্জামান চান্দুর কাছে চলমান কাজের ধীর গতির কথা জানতে চাইলে তিনি জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড তথা সরকার নিয়ন্ত্রিত ড্রেজারে বালু তুলতে না দেওয়ায় কাজের দেরি হচ্ছে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করব বলে আশাবাদী প্রতিষ্ঠানটি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন জানান, খোলপেটুয়া ও কপোতাক্ষ নদীর জোয়ারে যাতে নতুন করে বন্যার সৃষ্টি না হয় সে জন্য সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে ঠিকাদারকে দ্রæত কাজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হলে প্রতাবনগরে দূর্ভোগ কমবে।

তাই ভাঙন আতংক কাটাতে ও ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ অতি দ্রæত সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

মীর খায়রুল আলম/বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর