পুলিশকে তথ্য দেওয়ায় রগ কেটে হত্যা, মূলহোতাসহ গ্রেফতার ৫

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মাদক সিন্ডিকেটের তথ্য দেওয়ায় ঢাকার কেরানীগঞ্জে সায়মন ওরফে নূরে আলমকে (২৫) হাত-পায়ের রগ কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। সায়মন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। এ ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা মো. সুমন ওরফে গ্লাস সুমনসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

গ্রেফতার অন্যরা হলো- মো. সোহাগ ওরফে লম্বু সোহাগ, শরীফ ওরফে গরীব, জনি ওরফে হর্স পাওয়ার জনি এবং হারুন। সোমবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের সংবাদমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত সায়মনের ভাই মো. আরস আলম কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় ৭ থেকে ৮ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১০ রোববার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় হত্যায় ব্যবহৃত সুইচগিয়ার ও অন্যান্য ধারালো অস্ত্র। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

কমান্ডার মঈন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছে, সুমন একটি মাদক সিন্ডিকেটের মূলহোতা। সে দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারে জড়িত। কেরানীগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় সে গ্লাস কোম্পানি নামে একটি মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। এ চক্রে সক্রিয় সদস্য সংখ্যা ১২-১৫ জন।

তিনি আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে জানা যায়, কিছুদিন পূর্বে ‘গ্লাস কোম্পানি’র মাদক সিন্ডিকেটটির কয়েকজন সদস্য সম্পর্কে তথ্য পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ওই মাদক সিন্ডিকেটের কয়েকজন মাদক কারবারীকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার সুমন ও তার সহযোগীরা ভুক্তভোগী সায়মনকে সন্দেহ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সায়মনকে হত্যার পর হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয় তারা।

র‌্যাব জানায়, ঘটনার কয়েক দিন পূর্বে ভাগনা, বালুরচর মুক্তিরবাগ বালুর মাঠে এলাকায় হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা গ্রেফতার গ্লাস সুমন ও তার অন্যান্য সহযোগী গ্রেফতার সোহাগ ওরফে লম্বু সোহাগ ওরফে ঘটি সোহাগসহ আরও কয়েকজন সায়মনকে হত্যার চূড়ান্ত পরিকল্পনা করে। ওই পরিকল্পনায় ৫-৬ জন অংশগ্রহণ করে বলে গ্রেফতাররা জানায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৫ জানুয়ারি গ্লাস সুমন সিন্ডিকেট মুক্তিরবাগ বালুর মাঠে হত্যাকাণ্ডটি ঘটায়। গ্রেফতার হারুন তথ্য দিয়ে হত্যাকারীদের সহযোগিতা করে করে।

গ্রেফতার গ্লাস সুমনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক ও ছিনতাই সংক্রান্ত ৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেফতার সুমন পূর্বে গ্যাসের দোকানে কাজ করত এবং ভাঙা গ্লাস দিয়ে মানুষকে বিভিন্ন সময়ে আক্রমণ ও জখম করার কারণে এলাকায় গ্লাস সুমন হিসেবে পরিচিতি পান তিনি। এছাড়াও সোহাগ ওরফে লম্বু সোহাগ, জনি ওরফে হর্স পাওয়ার জনি এবং হারুনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

রানা আহমেদ/বার্তা বাজার/মনির

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর